*প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে * বিসিএস পরীক্ষা এর প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে* আনলিমিটেড টেস্ট রয়েছে আপনার জন্য এই ব্লগে * নতুন ও আপডেট তথ্য পেতে পাশের "follow/অনুসরণ" বাটনে ক্লিক করুন * নিজেকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করুন * আপনার শিশুকে কাব কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করুন * আপনার বাড়ি, বিদ্যালয়, অফিসের আঙ্গিনায় সবজির বাগান করুন, নিরাপদ ও বিষ মুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন * করোনার কমিউনিটি স্প্রেইডিং রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন * অযথা পাড়া বেড়ানো, চায়ের দোকানে আড্ডা পরিহার করুন * পরিবারে অধিক সময় দেয়ার চেষ্টা করুন * ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন *

মানুষের ত্বক, ত্বকের গঠন, ত্বকের কাজ (Human skin, structure and functions of skin)

Muhammad Abul Bashar Khan

দেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ হলো ত্বক। এর আয়তন প্রায় ২০ বর্গফুট এবং পুরুত্ব ২ মিলি মিটার বা ০.০৭ ইঞ্চি। মানুষের ত্বকের ওজন প্রায় ৩ কিলোগ্রাম বা ৬ পাউন্ড । মানুষের ত্বকের পুরুত্ব তার ত্বকের অবস্থান, লিঙ্গ ও বয়সভেদে বিভিন্ন হয়। ত্বকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুরুত্বের অঞ্চল হলো হাতের তালু ও পায়ের তলা এবং তা ১.৫ মিলি মিটার। আর সবচেয়ে কম পুরুত্বের অঞ্চল হলো চোখের পাতা ও কানের পিছনের অংশ এবং তা ০.০৫ মিলি মিটার। মানুষের ত্বক তিন স্তর বিশিষ্ট। যথা-

  •   এপিডার্মিস  
  •    ডার্মিস এবং
  •   হাইপোডার্মিস।

এপিডার্মিস: এই স্তরটি ত্বকের সবচেয়ে বাইরের স্তর। এটি পানি প্রতিরোধী আবরনী। তবে এ স্তরে দুই ধরনের ছিদ্র রয়েছে। এক ধরনের ছিদ্র দিয়ে শুধু ঘাম বের হয় এবং অন্য ধরনের ছিদ্র দিয়ে লোম বা চুল উত্থিত হয়েছে। তবে এই ধরনের ছিদ্রের সাথে ঘামগ্রন্থি ও তেলগ্রন্থির নালী সংযোক্ত থাকায় তেল ও ঘাম উভয়ই এই ছিদ্র দিয়ে বাইরে আসে। তবে বাইরে থেকে কোনো তরল এই ছিদ্রগুলো দিয়ে দেহের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। কোষের সংখ্যাভেদে এপিডার্মিসের পুরুত্ব কম বা বেশি হয়। কম পুরুত্বের অঞ্চলে এপিডার্মিস ৫০ কোষ বিশিষ্ট স্তর নিয়ে গঠিত। বেশি পুরুত্বের অঞ্চলে এপিডার্মিস ১০০ কোষ বিশিষ্ট স্তর নিয়ে গঠিত। এপিডার্মিসের গড় পুরুত্ব ০.১ মিলি মিটার। এতে কোনো রক্তনালী নেই তাই ত্বকের এই স্তর ডার্মিস থেকে অভিস্রবন প্রক্রিয়ায় পুষ্টি গ্রহণ করে। কেরাটিনোসাইটস, মেলানোসাইটস, ল্যাঙ্গারহ্যান্স কোষ ও মার্কেল কোষ নিয়ে এপিডার্মিস গঠিত। এপিডার্মিসের প্রায় ৯০% কেরাটিনোসাইটস দ্বারা গঠিত। কেরাটিনোসাইটস কেরাটিন নামক এক ধরনের প্রোটিন তৈরি করে যা এর ঘনত্ব বাড়ায় এবং ভেদ্যতা হ্রাস করে। দেহের ভেতরের অঙ্গগুলো বাইরের অনুজীব, ভাইরাস, ছত্রাক এবং পরজীবীর আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়, দেহের তাপমাত্রা প্রশমিত হয় এবং পানি বের হওয়ার পরিমান কমে। মেলানোসাইট কোষ মেলানিন নামে এক ধরনের কালো রঞ্জক পদার্থ তৈরি করে। মানুষের দেহের বর্ণের জন্য দায়ী এই মেলানিন। মেলানিনের আধিক্যের কারনে মানুষের ত্বক কালো বা ফর্সা হয়। চুলের বর্ণের জন্য এই মেলানিন দায়ী। মেলানিন সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষের দেহকে রক্ষা করে।

ডার্মিস: এপিডার্মিসের নিচেই রয়েছে ডার্মিস। ত্বকের এই স্তরটিই সবচেয়ে পুরো এবং এই স্তরটি দুইটি উপস্তরে বিভক্ত। উপরের কম পুরু উপস্তরের নাম প্যাপিলারী ডার্মিস এবং নিচের অপেক্ষাকৃত বেশি পুরু উপস্তরের নাম রেটিকুলার ডার্মিস। ডার্মিসে ঘন যোজক কলা(Tough connective tissue), চুল গুটিকা (Hair Follicle), ঘর্মগ্রন্থি বা ঘামগ্রন্থি (Sweat gland), তেলগ্রন্থি বা সিবেসিয়াস গ্রন্থি (Sebaceous gland), রক্তনালী (Blood vessels) এবং স্নায়ু প্রান্ত (Nerve endings) রয়েছে। ডার্মিস গড়ে ২ মিলি মিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট। তবে চোখের পাতায় ডার্মিস ০.৬ মিলি মিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট। হাতের তালু এবং পায়ের তলায় ডার্মিস ৩ মিলি মিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট। ত্বকের এই স্তরে তরল পদার্থ পরিবহন হয়। রক্তনালী ত্বকের পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এই স্তরে ফ্যাগোসাইটস নামে এক ধরনের কোষ থাকে যা বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থকে ধ্বংস করে ত্বককে রক্ষা করে। ত্বকের বেশিরভাগ এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ এই স্তরে সম্পন্ন হয় বলে এই স্তরকে অর্থাৎ ডার্মিসকে প্রকৃত ত্বক বলে। এই স্তর থেকেই চুল ও নখ উৎপন্ন হয়।

 

হাইপোডার্মিস: ত্বকের একেবারে নিচের স্তর বা ডার্মিসের নিচের স্তরের নাম হাইপোডার্মিস। চর্বি এবং যোজক কলা দ্বারা এই স্তর গঠিত। এই স্তরে ফ্যাট বা চর্বি দেহের সঞ্চিত খাদ্য হিসেবে জমা থাকে। অবস্থান অনুযায়ী পুরুষের ক্ষেত্রে হাইপোডার্মিসের পুরুত্ব ১.৬৫ মিলি মিটার থেকে ১৪.৬৫ মিলি মিটার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩.৩০ মিলি মিটার থেকে ১৮.২০ মিলি মিটার।

No comments:

Post a Comment