Muhammad Abul Bashar Khan
ঘর্মগ্রন্থি বা ঘামগ্রন্থি (Sweat glands)
ঘর্মগ্রন্থি হলো নলাকার প্যাঁচানো একটি অঙ্গ। এই অঙ্গগুলো ডার্মিসে অবস্থিত। মানুষের দেহে তিন ধরনের ঘর্মগ্রন্থি আছে। যথা-
- ইক্রাইন গ্রন্থি (Eccrine gland)
- অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থি (Apocrine gland) এবং
- অ্যাপোইক্রাইন গ্রন্থি (Apoeccrine gland)।
ইক্রাইন গ্রন্থি ত্বকের সর্বত্র বিরাজমান এবং পানি ও ইলেক্ট্রো্লাইট নিঃসরণ করে । অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থি লিপিডযুক্ত তৈলাক্ত প্রোটিন, স্টেরয়েড নিঃসরন করে এবং হেয়ার ফলিকল বা চুলের নালীর সাথে যুক্ত। এই ঘর্মগ্রন্থি ত্বকের যে অঞ্চলে চুল আছে শুধু সেই অঞ্চলেই বিরাজমান। হাতের তালু, পায়ের তলা, ঠোঁট ইত্যাদি চুলবিহীন ত্বক অঞ্চলে এরা অনুপস্থিত। অ্যাপোইক্রাইন গ্রন্থি ইক্রাইন গ্রন্থির ন্যায় পানি নিঃসরন করে। অবস্থান ভেদে মানুষের ত্বকে ১.৬ থেকে ৫ মিলিয়ন ঘর্মগ্রন্থি পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি পরিমানে ঘর্মগ্রন্থি পাওয়া যায় হাতের তালু, পায়ের তলায় ৬০০ থেকে ৭০০ প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে। ঘর্মগ্রন্থি দুইটি অংশে বিভক্ত। উপরের অংশ সোজা নালী যা এপিডার্মিসের তলে উন্মুক্ত আর নিচের অংশটি প্যাঁচানো এবং দুইটি আলাদা ধরনের কোষ clear cell এবং myoepithelial cell দ্বারা গঠিত।
ঘর্মগ্রন্থির কাজ: এই গ্রন্থির প্রথম এবং প্রধান কাজ ঘাম তৈরি করা। ঘাম হলো একটি ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ যার ৯৯% পানি, সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম বাই কার্বোনেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ল্যাকটেট, অ্যামোনিয়া এবং ইউরিয়া। এই গ্রন্থি দেহের বাইরের উষ্ণ পরিবেশে ঘাম নিঃসরনের মাধ্যমে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখা অর্থাৎ ৩৭০ সেলসিয়াস রাখে।দেহের তাপমাত্রা ৪০০ সেলসিয়াসের বেশি হলে প্রোটিন এর বন্ড ভাঙ্গতে থাকে যা মানুষকে হিট স্ট্রোকের দিকে ধাবিত করে।
No comments:
Post a Comment