*প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে * বিসিএস পরীক্ষা এর প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে* আনলিমিটেড টেস্ট রয়েছে আপনার জন্য এই ব্লগে * নতুন ও আপডেট তথ্য পেতে পাশের "follow/অনুসরণ" বাটনে ক্লিক করুন * নিজেকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করুন * আপনার শিশুকে কাব কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করুন * আপনার বাড়ি, বিদ্যালয়, অফিসের আঙ্গিনায় সবজির বাগান করুন, নিরাপদ ও বিষ মুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন * করোনার কমিউনিটি স্প্রেইডিং রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন * অযথা পাড়া বেড়ানো, চায়ের দোকানে আড্ডা পরিহার করুন * পরিবারে অধিক সময় দেয়ার চেষ্টা করুন * ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন *

মানুষের ত্বক, ত্বকের গঠন, ত্বকের কাজ (Human skin, structure and functions of skin)

Muhammad Abul Bashar Khan

দেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ হলো ত্বক। এর আয়তন প্রায় ২০ বর্গফুট এবং পুরুত্ব ২ মিলি মিটার বা ০.০৭ ইঞ্চি। মানুষের ত্বকের ওজন প্রায় ৩ কিলোগ্রাম বা ৬ পাউন্ড । মানুষের ত্বকের পুরুত্ব তার ত্বকের অবস্থান, লিঙ্গ ও বয়সভেদে বিভিন্ন হয়। ত্বকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুরুত্বের অঞ্চল হলো হাতের তালু ও পায়ের তলা এবং তা ১.৫ মিলি মিটার। আর সবচেয়ে কম পুরুত্বের অঞ্চল হলো চোখের পাতা ও কানের পিছনের অংশ এবং তা ০.০৫ মিলি মিটার। মানুষের ত্বক তিন স্তর বিশিষ্ট। যথা-

  •   এপিডার্মিস  
  •    ডার্মিস এবং
  •   হাইপোডার্মিস।

এপিডার্মিস: এই স্তরটি ত্বকের সবচেয়ে বাইরের স্তর। এটি পানি প্রতিরোধী আবরনী। তবে এ স্তরে দুই ধরনের ছিদ্র রয়েছে। এক ধরনের ছিদ্র দিয়ে শুধু ঘাম বের হয় এবং অন্য ধরনের ছিদ্র দিয়ে লোম বা চুল উত্থিত হয়েছে। তবে এই ধরনের ছিদ্রের সাথে ঘামগ্রন্থি ও তেলগ্রন্থির নালী সংযোক্ত থাকায় তেল ও ঘাম উভয়ই এই ছিদ্র দিয়ে বাইরে আসে। তবে বাইরে থেকে কোনো তরল এই ছিদ্রগুলো দিয়ে দেহের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। কোষের সংখ্যাভেদে এপিডার্মিসের পুরুত্ব কম বা বেশি হয়। কম পুরুত্বের অঞ্চলে এপিডার্মিস ৫০ কোষ বিশিষ্ট স্তর নিয়ে গঠিত। বেশি পুরুত্বের অঞ্চলে এপিডার্মিস ১০০ কোষ বিশিষ্ট স্তর নিয়ে গঠিত। এপিডার্মিসের গড় পুরুত্ব ০.১ মিলি মিটার। এতে কোনো রক্তনালী নেই তাই ত্বকের এই স্তর ডার্মিস থেকে অভিস্রবন প্রক্রিয়ায় পুষ্টি গ্রহণ করে। কেরাটিনোসাইটস, মেলানোসাইটস, ল্যাঙ্গারহ্যান্স কোষ ও মার্কেল কোষ নিয়ে এপিডার্মিস গঠিত। এপিডার্মিসের প্রায় ৯০% কেরাটিনোসাইটস দ্বারা গঠিত। কেরাটিনোসাইটস কেরাটিন নামক এক ধরনের প্রোটিন তৈরি করে যা এর ঘনত্ব বাড়ায় এবং ভেদ্যতা হ্রাস করে। দেহের ভেতরের অঙ্গগুলো বাইরের অনুজীব, ভাইরাস, ছত্রাক এবং পরজীবীর আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়, দেহের তাপমাত্রা প্রশমিত হয় এবং পানি বের হওয়ার পরিমান কমে। মেলানোসাইট কোষ মেলানিন নামে এক ধরনের কালো রঞ্জক পদার্থ তৈরি করে। মানুষের দেহের বর্ণের জন্য দায়ী এই মেলানিন। মেলানিনের আধিক্যের কারনে মানুষের ত্বক কালো বা ফর্সা হয়। চুলের বর্ণের জন্য এই মেলানিন দায়ী। মেলানিন সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষের দেহকে রক্ষা করে।

ডার্মিস: এপিডার্মিসের নিচেই রয়েছে ডার্মিস। ত্বকের এই স্তরটিই সবচেয়ে পুরো এবং এই স্তরটি দুইটি উপস্তরে বিভক্ত। উপরের কম পুরু উপস্তরের নাম প্যাপিলারী ডার্মিস এবং নিচের অপেক্ষাকৃত বেশি পুরু উপস্তরের নাম রেটিকুলার ডার্মিস। ডার্মিসে ঘন যোজক কলা(Tough connective tissue), চুল গুটিকা (Hair Follicle), ঘর্মগ্রন্থি বা ঘামগ্রন্থি (Sweat gland), তেলগ্রন্থি বা সিবেসিয়াস গ্রন্থি (Sebaceous gland), রক্তনালী (Blood vessels) এবং স্নায়ু প্রান্ত (Nerve endings) রয়েছে। ডার্মিস গড়ে ২ মিলি মিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট। তবে চোখের পাতায় ডার্মিস ০.৬ মিলি মিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট। হাতের তালু এবং পায়ের তলায় ডার্মিস ৩ মিলি মিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট। ত্বকের এই স্তরে তরল পদার্থ পরিবহন হয়। রক্তনালী ত্বকের পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এই স্তরে ফ্যাগোসাইটস নামে এক ধরনের কোষ থাকে যা বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থকে ধ্বংস করে ত্বককে রক্ষা করে। ত্বকের বেশিরভাগ এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ এই স্তরে সম্পন্ন হয় বলে এই স্তরকে অর্থাৎ ডার্মিসকে প্রকৃত ত্বক বলে। এই স্তর থেকেই চুল ও নখ উৎপন্ন হয়।

 

হাইপোডার্মিস: ত্বকের একেবারে নিচের স্তর বা ডার্মিসের নিচের স্তরের নাম হাইপোডার্মিস। চর্বি এবং যোজক কলা দ্বারা এই স্তর গঠিত। এই স্তরে ফ্যাট বা চর্বি দেহের সঞ্চিত খাদ্য হিসেবে জমা থাকে। অবস্থান অনুযায়ী পুরুষের ক্ষেত্রে হাইপোডার্মিসের পুরুত্ব ১.৬৫ মিলি মিটার থেকে ১৪.৬৫ মিলি মিটার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩.৩০ মিলি মিটার থেকে ১৮.২০ মিলি মিটার।

শরীরের সীমানা

Muhammad Abul Bashar Khan
.

জন্ম থেকে অদ্যবধি শিখছি। নিজেকে সমৃদ্ধ করছি। পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত তোলপাড় করে লুকিয়ে থাকা সকল কিছুর জ্ঞান আহরণ করার চেষ্টা করছি। জ্ঞানার্জনের জন্য অর্থ ও সময় ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য নেই আমাদের। একবারের জন্য কি কখনো নিজেকে জানার আগ্রহ জন্মেছে? হয়তো এখনই সেই আগ্রহ সৃষ্টি হলো। তাহলে দেরি কেন? জেনে নিই নিজের শরীরের সীমানা। 

জীবনের অতিক্ষুদ্রতম অংশের নাম হলো কোষ। প্রতিটি মানুষের শরীর  ত্রিশ ট্রিলিয়ন কোষ নিয়ে গঠিত। এক একটি কোষ এক এক রকম কাজ সম্পাদন করে থাকে। কিছু কিছু কোষ সম্মিলিতভাবে একটি কাজ করে থাকে। এ কারনে এই একই ধরনের কোষ সমস্টিকে টিস্যু বলা হয়। আবার কতগুলো টিস্যু সম্মিলিতভাবে একটি কাজ করে এবং এদের একত্রে বলে অঙ্গ। আবার কতগুলো অঙ্গ একত্রে একই কাজ করে এবং এই অঙ্গগুলোকে একত্রে বলে তন্ত্র। আর কতগুলো তন্ত্রের সমন্বয়ে মানুষের দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন হয়ে থাকে।
মানুষের দেহ মোট এগারোটি অঙ্গতন্ত্র নিয়ে গঠিত। এই অঙ্গতন্ত্র বা Organ system গুলো হলো-

  • ত্বকতন্ত্র বা Integumentary system,
  • পেশীতন্ত্র বা Muscular system,
  • কংকালতন্ত্র বা Skeletal system,
  • স্নায়ুতন্ত্র বা Nervous system,
  • সংবহণতন্ত্র বা Circulatory system,
  • লসিকাতন্ত্র বা Lymphatic system,
  • শ্বসনতন্ত্র বা Respiratory system,
  • অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতন্ত্র বা Endocrine system,
  • রেচনতন্ত্র বা Urinary/Excretory system,
  • জননতন্ত্র বা Reproductive system এবং
  • পরিপাকতন্ত্র বা Digestive system.  
ত্বকতন্ত্র বা Integumentary system : মানবদেহের বাহিরের আবরণ এবং এর মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন অঙ্গ নিয়ে এই তন্ত্র গঠিত। ত্বকতন্ত্রের অন্তর্ভূক্ত অঙ্গগুলো হলো-


ত্বকতন্ত্রের কাজ : দেহের ভিতরের সকল অঙ্গ ও তন্ত্রকে বাহিরের যেকোনো ধরনের আঘাত অথবা আগ্রাসন থেকে রক্ষা করা এবং মানুষের একটি নির্দিষ্ট আকৃতিদান এর প্রধান কাজ। এছাড়াও ত্বকতন্ত্র আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করে থাকে। তাহলো-


  • দেহের ভিতরের তরল পদার্থকে ধরে রাখা,
  • রোগ জীবানু প্রতিরোধ করা,
  • দেহের ভিতরের বর্জ্য পদার্থ বাইরে বের করে দেওয়া,
  • দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা।
পেশীতন্ত্র বা Muscular system: শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের সাথে যুক্ত প্রায় ৭০০ ধরনের পেশী নিয়ে এ তন্ত্র গঠিত। মানবদেহের মোট ওজনের অর্ধেক ওজন এই পেশীর ওজন। মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গ ও তন্ত্রের সাথে যুক্ত পেশীগুলো বিভিন্ন পেশীতন্ত্র নামে অভিহিত। যেমন বিভিন্ন হাড়ের সাথে যুক্ত পেশীগুলো কংকাল পেশীতন্ত্র নামে অভিহিত।
   
পেশীতন্ত্রের কাজ: বিভিন্ন অঙ্গের নড়াচড়া তথা মানুষের চলন এই পেশীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। 

কংকালতন্ত্র বা Skeletal system: বিভিন্ন ধরনের হাড় এবং সন্ধি নিয়ে এই তন্ত্র গঠিত। জন্মগ্রহণের পর মানুষের মোট ২৭০টি হাড় থাকে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এ সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ২০৬ এসে থামে। হাড়ের ক্ষয় এবং একটির সাথে অন্যটি মিশে যাওয়ার মাধ্যমে এই হাড়গুলোর সংখ্যা কমে ২০৬ টিতে আসে। বিভিন্ন প্রকার কোষ, প্রোটিন ফাইভার এবং খনিজ পদার্থ নিয়ে কংকাল গঠিত। অস্থি বা হাড়ের ওজন ও ঘনত্ব মানুষের ২১ বছর বয়সে সর্বোচ্চ থাকে।

  কংকালতন্ত্রের কাজ: দেহের নির্দিষ্ট আকৃতিদান এর প্রধান কাজ। দেহের বিভিন্ন কোমল অঙ্গকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করা এবং আশ্রয় প্রদান করা কংকালতন্ত্রের কাজ।

 স্নায়ুতন্ত্র বা Nervous system: বিশেষ ধরনের পেশী কলার সমন্বয়ে মানুষের স্নায়ুতন্ত্র গঠিত। মানুষের স্নায়ুতন্ত্র প্রধান দুইটি অংশে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে রয়েছে ব্রেইন এবং মেরুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড। প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে রয়েছে নার্ভ। ইহা লম্বা রজ্জুর ন্যায় একটির সাথে একটি যুক্ত হয়ে সাড়া দেহে বিস্তৃত। 

   স্নায়ুতন্ত্রের কাজ: বাহিরের পরিবেশের বিভিন্ন পরিবর্তন সনাক্ত করে সেই সংবাদ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতে পৌঁছানো এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ু থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনা দেহের নির্দিষ্ট অংশে বা অঙ্গে পৌঁছানো প্রান্তীয় স্নায়ুর কাজ।  দেহের ভিতরের এবং বাহিরের যেকোনো ধরনর পরিবর্তন এর সংবাদ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতে আসার পর তার প্রেক্ষিতে যা করতে হবে তার সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াকরণের কাজ হলো কেন্দ্রীয় স্নায়ুর কাজ। কেন্দ্রীয় স্নায়ু দেহের যাবতীয় কাজের নির্দেশনা প্রদান করে থাকে। আমাদের চলন, স্থবিরতা, বিশ্রাম, ঘুম সকল কিছুরই নির্দেশনা প্রদান করে আমাদের স্নায়ুতন্ত্র।  

সংবহণতন্ত্র বা Circulatory system:  এই তন্ত্র তিনটি স্বতন্ত্র সিস্টেম বা তন্ত্রের সমন্বয়ে গঠিত। সিস্টেম তিনটি হলো-

  •  হৃদপিন্ড বা (Cardiovascular system)
  • ফুসফুস বা (Pulmonary system)
  • ধমনী, শিরা, করোনারী এবং পোর্টাল ভেসেল। 
সংবহণতন্ত্রের কাজ: সারা দেহে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে খাদ্য উপাদান, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং বিভি হরমোনের পরিবহণ করাই হলো সংবহণতন্ত্রের কাজ। রক্তের মাধ্যমেই সারা দেহে বিভিন্ন বস্তুর পরিবহন হয়। আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবানুও এর মাধ্যমে ছড়ায়। সুতরাং এই তন্ত্র মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তন্ত্র।

লসিকাতন্ত্র বা Lymphatic system:  লিম্ফ ভেসেল, লিম্ফয়েড অঙ্গ এবং লিম্ফয়েড টিস্যু সমন্বয়ে এই তন্ত্র গঠিত। এটিও রক্ত সংবহন তন্ত্রের ন্যায় সারাদেহে জালের ন্যায় বিস্তৃত। এই তন্ত্রের নালীগুলো পরিস্কার লিম্ফ বা লসিকা তরল পরিবহন করে। এই তরলটি রক্তের শ্বেত কণিকা সমৃদ্ধ। 


লসিকাতন্ত্রের কাজ: এটি মূলত সংবহনতন্ত্র ও ইমিউন সিস্টেম এর অংশ। কোনো রোগাক্রান্ত স্থানে দেহের প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত রক্তের শ্বেত কণিকা পরিবহণ করা এর কাজ।

শ্বসনতন্ত্র বা Respiratory system: এই তন্ত্রের প্রধান অঙ্গ হলো ফুসফুস। নাসারন্ধ্র, শ্বাসনালী ও ফুসফুস নিয়ে শ্বসনতন্ত্র গঠিত। ফুসফুসের ক্ষুদ্রতম অংশ হলো এ্যালভিউলাস বা বায়ুকুঠুরী। দেহের বাইরের বাতাস থেকে অক্সিজেন নাসারন্ধ্র, শ্বাসনালী হলে ফুসফুসে আসে এবং তা এ্যালভিউলাসে এলে রক্তনালীর লোহিত রক্তকণিকা অক্সিজেন শোষন করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড মুক্ত করে দেয়। অক্সিজেন সমৃদ্ধ লোহিত রক্ত কণিকা দেহের বিভিন্ন কোষে এই অক্সিজেন পরিবহণ করে।

শ্বসনতন্ত্রের কাজ: দেহের ভিতর ও বাহিরে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড আদান প্রদান করা।


অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতন্ত্র বা Endocrine system: এই তন্ত্রের অন্তর্ভূক্ত কতগুলো অঙ্গ রয়েছে যারা কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে। এই রাসায়নিক পদার্থগুলো নির্দিষ্ট সংবাদ বহন করে এবং তা নির্দিষ্ট স্থানে পরিবাহিত হয়। মানুষের দেহে এই অঙ্গগুলো বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত। মাথায় মস্তিষ্কের পেছন দিকে দুইপাশে পিটুইটারী এবং পিনিয়াল গ্রন্থি নামে দুইটি গ্রন্থি থাকে। গলায়  রয়েছে থাইরয়েড গ্রন্থি। বৃক্কের নিকট রয়েছে এডরেনাল গ্রন্থি এবং প্যানক্রিয়াস। জনন অঙ্গের সাথে যুক্ত পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রাশয় এবং স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়। এই গ্রন্থিগুলো থেকে নিঃসৃত রস কোনো নালীর মধ্যে নিঃসৃত হয় না। এ রসকে হরমোন বলে। বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে বিভিন্ন হরমোন নিঃসরন হয়ে নির্ধারিত স্থানে নির্দিষ্ট কাজের সংবাদ প্রেরণ করে।
অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির কাজ: বিভিন্ন হরমোন নিঃসরন করা। আর বিভিন্ন হরমোন দেহের বৃদ্ধি, বিপাক এবং জনন অঙ্গের বিকাশ সাধন করে থাকে।

রেচনতন্ত্র বা Urinary/Excretory system: রেচন তন্ত্রের অন্তর্গত অঙ্গগুলো হলো কিডনি, জরায়ু, মূত্রথলী ও মূত্রনালী।
রেচনতন্ত্রের কাজ: রেচনতন্ত্র দেহের বিভিন্ন কাজ করে থাকে- 
  • দেহের তরল বর্জ্য পদার্থ বাইরে বের করে দেওয়া।
  • মূত্র তৈরির মাধ্যমে রক্তে পানির সমতা রক্ষা করা।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা।
  • রক্তের pH এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা।
জননতন্ত্র বা Reproductive system: পুরুষ ও স্ত্রীর ক্ষেত্রে জননতন্ত্র আলাদা ধরনের। পুরুষের জননতন্ত্রের মধ্যে রয়েছে শুক্রাশয়, শুক্রথলি এবং শিশ্ন। অপরদিকে স্ত্রী জননতন্ত্রের অন্তর্গত অঙ্গ হলো ডিম্বাশয়, জরায়ু এবং যোনি।
জননতন্ত্রের কাজ: পুরুষ জননতন্ত্রের কাজ হলো শুক্র উৎপাদন ও তা ডিপোজিট করা। অপরদিকে স্ত্রী জনন অঙ্গের কাজ হলো ডিম্বানু উৎপাদন ও মানব শিশু জন্মগ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত ভ্রুণকে রক্ষা, পুস্টি সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা। 

পরিপাকতন্ত্র বা Digestive system:  মানুষের পরিপাকতন্ত্র Gastrointestinal Tract এবং Accessory Organ নিয়ে গঠিত। Gastrointestinal Tract এর অন্তর্ভূক্ত হলো মুখ, মুখ গহবর, গলবীল, গলনালী, পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্র, মলাশয় ও পায়ু। অপরদিকে Accessory Organ সমূহ যারা খাদ্য পরিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তারা হলো জিহবা, লালাগ্রন্থি, প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়, লিভার বা যকৃত এবং গলব্লাডার বা পিত্তথলী।
পরিপাকতন্ত্রের কাজ: খাদ্য পরিপাকের মাধ্যমে খাদ্যের পুষ্টি উপাদান দেহ দ্বারা শোষিত হওয়ার উপযোগী সরল খাদ্য উপাদানে বিশ্লেষন করা।

যেভাবে বিকাশে বিদ্যুৎবিল পরিশোধ করা যায় !

Muhammad Abul Bashar Khan


বিদ্যুৎবিল, গ্যাস বিল, পানির বিল ইত্যাদি পরিশোধ করতে যাওয়া, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহাবিড়ম্বনার আরেক রূপ বিড়ম্বনা একটি নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রতি মাসেই কমপক্ষে এক দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে সেক্রিফাইস করতে হতো এই বিল দেওয়ার কাজে তারপর যদি বিল দিতে যেতে একটু দেরি হলো তাহলে তো কথাই নেই সেই দিনটি একেবারেই হারিয়ে গেল পরের দিনের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল সেবা সে বিড়ম্বনার কিছুটা লাঘব করে আশার বানী শুনিয়েছে এখন অনেক বিলই ঘরে বসে ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে পরিশোধ করা যায় এরকম একটি সেবা হলো মোবাইল ব্যাংকিং মোবাইল ব্যাংকিংএ বাংলাদেশে সবার শীর্ষে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ বিকাশের মাধ্যমে এখন টাকা পাঠানো প্রাপ্তি থেকে শুরু করে কেনা কাটা বিল পরিশোধ করা অনেক সহজ হয়েছে বিকাশের নানাবিধ সেবার মধ্যে যেভাবে সহজে বিদ্যুৎবিল পরিশোধ করা যায় তা নিয়েই আজকের আমার এই আলোচনা যারা এই সেবাটি এখনও গ্রহণ করেননি বা সম্পর্কে এখনও ধারণা নেই তাদের জন্য আমার ক্ষুদ্র চেষ্টা আমার লেখায় যদি আপনাদের ন্যূনতম উপকারে আসে তাহলেই আমার লেখার সার্থকতা তাহলে আসুন, জেনে নিই বিদ্যুrবিল পরিশোধ করার নিয়ম:

প্রথমে আপনার মোবাইলের ডায়ালার ওপেন করুন এবার *247# লিখে আপনার মোবাইলের যে সিমে বিকাশ একাউন্ট করা এবং পর্যাপ্ত পরিমানে টাকা আছে সেই সিম থেকে ডায়াল করুন 

bKash নামে একটি মেন্যু আসবে যাতে মোট ৮টি সাবমেন্যু রয়েছে নম্বরে রয়েছে Send Money এবং এই সাবমেন্যুতে প্রবেশ করে আপনি আপনার একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন এতে সেবার তুলনায় খরচ হয় খুবই সামান্য নম্বর সাবমেন্যুতে আছে Mobile Recharge এবং এতে প্রবেশ করে আপনার যেকোনো মোবাইল নম্বরে যেকোনো পরিমান টাকা রিচার্জ করতে পারবেন একদম বিনামূল্যে নম্বরে আছে Payment এবং এতে প্রবেশ করে আপনি কেনাকাটা থেকে শুরু করে অনেক ধরনের বিল পরিশোধ করতে পারবেন নম্বর সাবমেন্যুতে আছে Cash Out এবং এতে প্রবেশ করে আপনি যেকোনো বিকাশ এজেন্টের দোকানে গিয়ে নগদ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন নম্বরে আছে Paybill এবং এতে প্রবেশ করে আপনি  বিদ্যুৎবিলসহ আরো বেশ কিছু বিল পরিশোধ করতে পারবেন 

  নম্বর সাবমেন্যুর মধ্যে প্রবেশ করে আপনি আপনার মোবাইলে প্রথম বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশন করলে ২৫ টাকা বোনাস পাবেন নম্বরে আছে My bKash এবং এতে প্রবেশ করে আপনি আপনার বিকাশ একাউন্টে কত ব্যালেন্স আছে তা জানতে পারবেন বিকাশ সম্পর্কিত অন্য কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে নম্বরে প্রবেশ করে পাবেন
আপনার বিদ্যুrবিল পরিশোধের জন্য উক্ত মেন্যুর নিচে আন্ডারলাইনের উপরের ফাঁকা স্থানে আঙ্গুল প্রেস করুন  



কী প্যাড চলে আসবে এবার কী প্যাড থেকে 5 লিখুন এবং Send প্রেস করুন Paybill শিরোনামে একটি মেন্যু আসবে এখানে ১০ ধরনের বিল পরিশোধের জন্য তালিকা থাকবে এরমধ্যে নম্বরেই আছে Electricity (Prepaid) এবং আমরা প্রিপেইড মিটারের বিদ্যুৎবিল পরিশোধ করা শিখবো  



এজন্য তালিকাটি নিচে আন্ডারলাইনের উপরের ফাঁকা জায়গায় প্রেস করে কী প্যাড দিয়ে লিখুন 1 এবং Send প্রেস করুন এবার Electricity (Prepaid) শিরোনামে ৫টি সাবমেন্যু সম্বলিত আরেকটি মেন্যু আসবে  


এবার মেন্যু থেকে আপনার বিদ্যুr বিতরনকারী কর্তৃপক্ষের নাম অনুসারে সাবমেন্যু নির্বাচন করতে হবে পল্লীবিদ্যুr এবং বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের বিদ্যুr বিতরন কর্তৃপক্ষের বাইরে দেশের অন্যান্য পৌর এলাকায় বিদ্যুr বিতরণ BPDP নামক প্রতিষ্ঠান করে থাকে সবগুলো অপশনেই বিদ্যুrবিল পরিশোধের নিয়ম একই রকম তবে আমরা এখন বিদ্যুrবিল পরিশোধ করবো BPDB এর এটি আছে 4 নম্বরে তাহলে একই ভাবে আন্ডারলাইনের উপরে প্রেস করে কী প্যাড নিয়ে আসুন এবং 4 লিখে Send প্রেস করুন  



এখানে একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো কীপ্যাডের নিচের ডান কোণায় যে টিক চিহ্ন রয়েছে তাতে প্রেস করলেও Send প্রেস করা হয়ে যাবে নতুন আরেকটি BPDB (Prepaid) শিরোনামে মেন্যু আসবে এর নম্বরে আছে Make Payment এবং এই সাবমেন্যুতেই প্রবেশ করতে হবে  

আগের মতোই আন্ডারলাইনের উপরে প্রেস করে কী প্যাড নিয়ে আসুন এবং 2 প্রেস করে Send করুন এবার Make Payment শিরোনামে আরেকটি মেন্যু আসবে এর 1 নম্বরে আছে Inpute Account Number এবং একই রকম আন্ডারলাইনের উপরে 1 লিখে Send করুন   

এবার Enter Meter Number: শিরোনামে পেইজ আসবে এখানে লিখার স্থানে আপনার বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটারের নম্বরটি লিখুন এবং Send করুন
 
  Enter Contact Number: শিরোনামে আরেকটি পেইজ আসবে এতে বিলের জন্য একটি টোকেন নম্বর দেওয়া হবে এই টোকেন নম্বর যে মোবাইলে পেতে চান আপনার সেই মোবাইল নম্বর লিখে Send করুন 


 এবার Enter Amount: শিরোনামে আরেকটি পেইজ আসবে এর নির্ধারিত স্থানে আপনি কত টাকা বিদ্যুrবিল দিতে চান তা লিখুন এবং Send করুন  


এবার একটি মেসেজ বক্স আসবে যাতে আপনার প্রবেশ করানো মিটার নম্বর, মোবাইল নম্বর এবং টাকার পরিমান প্রদর্শন করবে এবং আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর দিয়ে কনফার্ম করতে বলা হবে  

আপনি নির্ধারিত স্থানে আপনার ডিজিটের পিন নম্বরটি লিখুন এবং Send করুন বিকাশ থেকে আপনার যে মোবাইলে বিকাশ একাউন্ড আছে বা আপনি যে বিকাশ নম্বর থেকে বিল পরিশোধ করলেন সেই মোবাইল নম্বরে পরপর দুইটি SMS আসবে 

 তার পর পরই আপনি টোকেন নম্বরের জন্য যে মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন সেই মোবাইলে আপনার প্রদত্ত্ব বিলের বিস্তারিত বিবরণসহ বিশ ডিজিট সম্বলিত টোকেন নম্বর সমেত SMS আসবে 


 এবার আপনার মিটারে এই টোকেন নম্বর প্রবেশ করালেই বিদ্যুrবিল রিচার্জ হয়ে যাবে