*প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে * বিসিএস পরীক্ষা এর প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে* আনলিমিটেড টেস্ট রয়েছে আপনার জন্য এই ব্লগে * নতুন ও আপডেট তথ্য পেতে পাশের "follow/অনুসরণ" বাটনে ক্লিক করুন * নিজেকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করুন * আপনার শিশুকে কাব কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করুন * আপনার বাড়ি, বিদ্যালয়, অফিসের আঙ্গিনায় সবজির বাগান করুন, নিরাপদ ও বিষ মুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন * করোনার কমিউনিটি স্প্রেইডিং রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন * অযথা পাড়া বেড়ানো, চায়ের দোকানে আড্ডা পরিহার করুন * পরিবারে অধিক সময় দেয়ার চেষ্টা করুন * ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন *

Class 7 Information and Communication Technology (ICT)

 ৭ম শ্রেণি । তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

১ম অধ্যায়: প্রাত্যহিক জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি


প্রশ্ন ১ : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সম্পর্কে লিখো ৷

উত্তর: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জিও-স্টেশনারি স্যাটেলাইট। এটি পৃথিবী থেকে ৩৬,০০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করে বলেই একে জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট বলা হয়। ১২ মে ২০১৮ তারিখে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এভাবেই নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসেবে গৌরব অর্জন করে।

প্রশ্ন ২: মোবাইল টেলিফোনকে বুদ্ধিমান যন্ত্র বলার কারণ বর্ণনা করো।

উত্তর: বর্তমানে মোবাইল টেলিফোন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আশীর্বাদ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। মোবাইল টেলিফোনের মাধ্যমে আমরা সশরীরে না গিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অনায়াসে যোগাযোগ করতে পারি। যোগাযোগ ছাড়াও মোবাইল টেলিফোনের সাহায্যে গান শোনা, ছবি তোলা, ভিডিও করা, খুঁদে বার্তা পাঠানোর কাজ করা যায়। প্রতিনিয়ত এর উন্নতির ফলে কম্পিউটারের কাজ আমরা মোবাইল টেলিফোনে করতে পারছি। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা এটি ব্যবহার করে বিভিন্ন অনলাইন নির্ভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন খুব সহজেই সম্পন্ন করতে পারছে।
এভাবে মোবাইল টেলিফোন আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে। এটি জীবনের মানকে বদলে দিয়েছে। মানুষ যেমন তার এটি বুদ্ধি দিয়ে অনেক কাজ করতে পারে তদ্রুপ মোবাইল টেলিফোনও বিভিন্ন ফাংশন ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করে। এ জন্যই মোবাইল টেলিফোনকে একটি বুদ্ধিমান যন্ত্র বলা হয়।

প্রশ্ন ৩: ভার্চুয়াল অফিস সম্পর্কে ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ভার্চুয়াল অফিস এমন একটি অফিস যেখানে কর্মীরা সশরীরে উপস্থিত না থেকে কাজ করে। ১৯৮৩ সালে সর্বপ্রথম ভার্চুয়াল অফিস নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে এ অফিসের কাজকর্ম শুরু হয়। কর্মীরা দূরে নিজ নিজ বাসায় বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অফিসের কাজকর্ম করে থাকে। উন্নত দেশগুলোতে ভার্চুয়াল অফিসের কাজকর্ম শুরু হয়েছে। নিয়ম-নীতি মেনে কাজ করলে ভার্চুয়াল অফিসের কাজকর্ম সাধারণ অফিসের চেয়ে বেশি হয়। ভার্চুয়াল অফিস করার জন্য অনেক বড় অফিসের দরকার হয় না, প্রয়োজন হয় ইন্টারনেটযুক্ত কম্পিউটার এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ। তাই বর্তমানে দিন দিন ভার্চুয়াল অফিস অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

প্রশ্ন ৪: ভার্চুয়াল অফিসের সুবিধাগুলো উল্লেখ করো।

উত্তর: ভার্চুয়াল অফিসে কর্মীরা সশরীরে উপস্থিত না থেকে কাজ করে বলে এর অনেক সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, অফিসের জন্য বড় ভবন দরকার হয় না। দ্বিতীয়ত, কর্মীদের রাস্তা ঘাটের ট্রাফিক জ্যামের সাথে যুদ্ধ করে অফিসে আসতে হয় না। তৃতীয়ত, বাসায় বসে কাজ করা যায় বলে, অফিসের কাজের পাশাপাশি বাসার কাজকর্ম করা যায়। ভার্চুয়াল অফিস দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা যায়। অফিস চালানো বাবদ খরচ অনেক কম হয়। দিন-রাত ভার্চুয়াল অফিসের কার্যক্রম থাকে বলে গ্রাহকরাও এতে উপকৃত হয়। এ সকল কারণে বর্তমানে ভার্চুয়াল অফিস অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

প্রশ্ন ৫: ঘরে বসে টাকা উপার্জন সম্ভব বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগে আজকাল ঘরে বসেই অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারনেট প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কাজকর্ম এখন ঘরে বসেই করা যাচ্ছে। অনেক তরুণ-তরুণী অফিসে না গিয়ে নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে ব্যক্তি স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এ ধরনের কাজ করতে একটা কম্পিউটার আর ইন্টারনেটের সংযোগ দরকার তার সাথে দরকার- প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষতা। এভাবে একজন দক্ষ প্রযুক্তিবিদ নিজের ঘরে বা যেকোনো জায়গায় বসে বিভিন্ন কোম্পানির কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে।

প্রশ্ন: ৬: কর্মক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবটের ভূমিকা লেখো।

উত্তর: ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট হচ্ছে এক ধরনের উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন রোবট যা দিয়ে শিল্প কারখানার বিপজ্জনক যান্ত্রিক কাজ করানো হয়। একঘেয়ে বিপজ্জনক কাজগুলো মানুষ না করে রোবট দিয়ে করা হচ্ছে। জাহাজ কারখানায় বিশাল বিশাল ধাতব টুকরাকে নির্দিষ্ট আকারে কেটে তারপর ওয়েল্ডিং করা হয়। এ সময় তীব্র আলোর ঝলকে আমাদের চোখের ক্ষতি করে। এ জন্য শিল্প-কারখানায় মানুষের বদলে বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট দিয়ে কাজ করানো হয়। রোবটের ক্লান্তি নেই বলে এক নাগাড়ে অনেকক্ষণ কাজ করতে পারে। তাই পৃথিবীর বড় বড় কলকারখানায় শ্রমিক হিসাবে এখন মানুষের বদলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট ব্যবহার করা হয়। এর ফলে বিপজ্জনক কাজে মানুষের ঝুঁকি নিতে হয় না।

প্রশ্ন ৭: সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে আইসিটির ভূমিকা উল্লেখ করো।

উত্তর: মানুষ সামাজিক জীব। সবার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আর দেওয়া-নেওয়ার মধ্যদিয়ে একটি সমাজ এগিয়ে চলে। সমাজের সবার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষায় আগে চিঠি বিনিময় হত। কিন্তু টেলিফোন আর টেলিগ্রাম আবিষ্কারের ফলে সামাজিক সম্পর্ক রক্ষায় তাদের অবদান অনেক। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট রয়েছে যেখানে সবসময় একে অপরের খোঁজ খবর নিতে পারছে। ফলে সমাজের বিভিন্ন দিকে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করছে। এভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সামাজিক চাহিদা পূরণের ব্যাপারগুলো হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে এবং সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

প্রশ্ন ৮: ই-কার্ড সম্পর্কে বর্ণনা করো।

উত্তর: ইলেকট্রনিক কার্ডের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ই-কার্ড। এটিকে পোস্টকার্ড অথবা শুভেচ্ছা বার্তাও বলা হয়। সাধারণত ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক ডিজাইনের মাধ্যমে একে অপরের মধ্যে শুভেচ্ছা বা আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ই-কার্ড যেমন: ফ্লাশ অ্যানিমেশন, ভিডিও, মোবাইল, ওয়েব বেজডসহ বিভিন্ন ইকার্ড রয়েছে। তুমি নিজে কম্পিউটারে ই-কার্ড তৈরি করে সেটি ই-মেইলে পাঠাতে পারো। আবার ইন্টারনেট থেকে ই-কার্ড সংগ্রহ করে তোমার প্রিয়জনের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারো।

প্রশ্ন ৯: সামাজিক যোগাযোগের সাইটসমূহের ব্যবহারগুলো উল্লেখ করো।

উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক যোগাযোগকে দ্রুত, আকর্ষণীয় এবং কার্যকরী করে তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগের সাইটসমূহের ব্যবহারগুলো হচ্ছে—
১. সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা এবং সামাজিক বন্ধন অটুট রাখা ।
২. তথ্য আদান-প্রদান করা।
৩. ছবি, ভিডিও আদান-প্রদান করা।
৪. নিজের মতামত বন্ধুদের জানানো এবং বন্ধুদের মতামত জানা।
৫. সামাজিক আন্দোলন বা বিপ্লব গড়ে তোলা।
৬. সামাজিক যোগাযোগে বিভিন্ন দেশের মানুষের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা।

প্রশ্ন ১০: সামাজিক বিপ্লবে সামাজিক যোগাযোগ সাইটের ভূমিকা উল্লেখ করো অথবা, সামাজিক যোগাযোগ সাইট কীভাবে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে? সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর: সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখ, পণ্যের বিজ্ঞাপন, কাজের খবর, ছবি ভিডিও শেয়ারিং ছাড়াও সামাজিক আন্দোলন সংগঠিত করার কাজও করছে। ২০১০-২০১১ সালে আরব বিশ্বে বিশেষ করে তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়ায় যে সামাজিক বিপ্লব হয়েছিল তার পেছনে সকল সামাজিক যোগাযোগ সাইটের বিশেষ ভূমিকা ছিল। এখানে সবার সুচিন্তিত মতবাদ ও আদর্শকে গ্রহণ করে কোনো বিষয়ে জনমত গঠন করা যায়। জনমতের দ্বারা সমাজের দুর্নীতি, অবিচার ইত্যাদি বিষয়ে আন্দোলন করা যায়। তাই, সামাজিক বিপ্লবে বর্তমানে সামাজিক নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২য় অধ্যায়: কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি

প্রশ্ন ১ : কী-বোর্ডকে প্রধান ইনপুট ডিভাইস বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কী-বোর্ডকে প্রধান ইনপুট ডিভাইস বলা হয়। কারণ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অধিকাংশ যন্ত্রে কী-বোর্ডের মাধ্যমে নির্দেশনা দিতে হয়। বিশেষ করে কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং কাজে একমাত্র কী-বোর্ড দিয়ে প্রায় সকল ধরনের নির্দেশনা দিতে হয়। কোনো কিছু লিখতে কী বার্ড আবশ্যক। কেননা কী-বোর্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষার কমান্ড থাকে। কী-বোর্ডে বর্ণ, সংখ্যা, চিহ্ন থাকে। একজন ব্যবহারকারী সহজেই সেগুলো কী-বোর্ড কমান্ডের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া কী বোর্ড দিয়ে যেসকল কাজ করা যাবে কিন্তু অন্যান্য ইনপুট যন্ত্র দিয়ে সে সব কাজ করা যায় না। এ কারণেই কী-বোর্ডকে প্রধান ইনপুট ডিভাইস বলা হয়।

প্রশ্ন ২ : মাইক্রোফোন ডিভাইস সম্পর্কে বর্ণনা করো।
উত্তর: মাইক্রোফোন ইনপুট যন্ত্র । এই যন্ত্র ব্যবহার করে আমরা কথা, গান বা যেকোনো ধরনের শব্দ কম্পিউটারে প্রবেশ করাতে পারি। বিশেষ করে অনলাইনভিত্তিক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ক্ষেত্রে কথা বলার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। টেলিফোন মাধ্যমে এটি ব্যবহৃত হয় বলে এ যন্ত্রটির আবিষ্কার অনেক আগেই হয়েছে। বর্তমানে এটি কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে ইনপুট যন্ত্র হিসাবে ব্যবহার হয়। কথা বলা ছাড়াও ভয়েস রিকগনিশনের ক্ষেত্রে মাইক্রোফোন ব্যবহার হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ৩ : কী-বোর্ড একটি ইনপুট ডিভাইস– ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কম্পিউটারে ইনপুট দেওয়ার প্রধান এবং বহুল ব্যবহৃত যন্ত্র হলো কী বোর্ড। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অধিকাংশ যন্ত্রে সাধারণত কী বোর্ডের মাধ্যমে ইনপুট দেওয়া হয়। কম্পিউটার বা অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে কোনো কাজ করতে চাইলে, এদের কিছু নির্দেশনা দিতে হয়। কী বোর্ডের বোতাম চেপে এ নির্দেশ বা ডেটা কম্পিউটার/যন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তখন কম্পিউটার/যন্ত্রটি আমাদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজটি করে দেয়। এ জন্য কী বোর্ড ইনপুট ডিভাইস হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হয়। 

প্রশ্ন ৪ : কী বোর্ডের গঠন আলোচনা করো।

উত্তর: কম্পিউটারে বিভিন্ন তথ্য বা নির্দেশনা প্রদান করার অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কী বোর্ড ব্যবহৃত হয়। আধুনিক কম্পিউটারের কী বোর্ডের ধারণা টাইপরাইটার থেকে এসেছে। কী বোর্ডে সাধারণত বর্ণ, সংখ্যা, অঙ্ক, প্রতীক ইত্যাদি বাটন বিন্যস্ত থাকে। এছাড়া এতে কম্পিউটার অপারেটিং, মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট ব্যবহার ইত্যাদি কাজের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা সম্বলিত বিশেষ বাটন থাকে। কী বোর্ড সাধারণ ইংরেজি ভাষায় হলেও অন্যান্য ভাষায় কী বোর্ড পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলা লেআউট যুক্ত কম্পিউটার কী বোর্ড পাওয়া যায়। কম্পিউটারে গেমস খেলা, গ্রাফিক্স এর কাজ করার জন্যও বিশেষ কিছু বাটনসহ কী বোর্ড পাওয়া যায়। সকল কী বোর্ড কম্পিউটারে ইনপুট ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যদিও গঠন ভিন্ন হয়।

প্রশ্ন ৫ : ডিজিটাল ক্যামেরা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: ডিজিটাল ক্যামেরা হচ্ছে এক ধরনের ইনপুট ডিভাইস। প্রথমদিকে মহাকাশ গবেষণার কাজে ডিজিটাল ক্যামেরা কম্পিউটারের ইনপুট যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় সকল ডিজিটাল ক্যামেরাই কম্পিউটারের ইনপুট যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ডিজিটাল ক্যামেরার ছবি বা ভিডিও ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করে কম্পিউটার ইনপুট হিসেবে প্রবেশ করানো হয়। ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবি, ভিডিও ভালো মানের হয়ে থাকে। ডিজিটাল ক্যামেরায় ফিল্ম-এর বদলে মেমোরি ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। ফিল্ম-এ ছবি তোলার সংখ্যা সীমিত কিন্তু ডিজিটাল ক্যামেরায় অসংখ্য ছবি তোলা যায়।

প্রশ্ন ৬ : স্ক্যানার সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: স্ক্যানার হচ্ছে ছবি, লেখা বা ডকুমেন্ট বা কোনো বস্তুর ডিজিটাল প্রতিলিপি কম্পিউটারে দেওয়ার জন্য একটি ইনপুট ডিভাইস। আগে ফটোকপি মেশিনের সাহায্যে বিভিন্ন ডকুমেন্টের প্রতিলিপি করা হতো। কিন্তু এ প্রতিলিপিটি যতবার দরকার ততবারই মেশিন ব্যবহার করে প্রতিলিপি করতে হতো এবং তথ্যটি সংরক্ষিত করা যেত না। স্ক্যানার এ সমস্যাটির সমাধান দিয়েছে। স্ক্যানার ব্যবহার করে ছবি, ডকুমেন্ট বা কোনো বস্তুর ডিজিটাল প্রতিলিপি তৈরি করে কম্পিউটারে ফাইল আকারে সংরক্ষণ করা যায়। প্রয়োজনে এ ডিজিটাল প্রতিলিপি পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে যে কোন সময়ে ব্যবহার করা যায়।

প্রশ্ন ৭ : ওএম আর (OMR) সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো ৷

উত্তর: অপটিক্যাল মার্ক রিডার (Optical Mark Reader) এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ওএম আর (OMR)। এটি একটি কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস। এটি আলোর প্রতিফলন বিচার করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য বুঝতে পারে। ওএম আরের কাজের ধরণ অনেকটা স্ক্যানারের মতো। বিশেষভাবে তৈরি করা কিছু দাগ বা চিহ্ন ওএম আর পড়তে বা বুঝতে পারে। আলোর প্রতিফলন ধর্ম ব্যবহার করে ওএম আর কাজ করে। বিভিন্ন পরীক্ষার বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরপত্র যাচাইয়ে, বাজার সমীক্ষা, বিভিন্ন জরিপের কাজে ওএম আর ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন ৮ : র‍্যাম (RAM) কে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মাদারবোর্ডের প্রসেসর র্যামের যেকোনো জায়গা থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে বলে একে Random Access Memory বা সংক্ষেপে RAM বা র‍্যাম বলে। প্রসেসর র‍্যাম থেকে তথ্য নিয়ে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে। আর এ প্রক্রিয়াজাতকরণ বিদ্যুৎ প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুৎ প্রবাহ থাকলে র্যাম থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে প্রসেসর প্রক্রিয়াজাত করতে পারে। আর বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হলে র্যামের সমস্ত ডেটা বা তথ্য মুছে যায়। র্যামে রাখা ডেটা বা তথ্য ব্যবহারকারী পরিবর্তন করতে পারে। এ সকল কারণে র্যামকে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয়।

প্রশ্ন ৯ : রম (ROM) কে স্থায়ী মেমোরি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: রম (ROM) অর্থাৎ Read Only Memory এটি প্রধান মেমোরির অন্যতম প্রধান। এটি মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত থাকে। কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সচল রাখার জন্য কিছু নির্দেশনা প্রয়োজন হয়। এই নির্দেশনাগুলো ছাড়া কম্পিউটার চালু করা যায় না, বিধায় নিদের্শনাসমূহ ROM -এ স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকে। যা বিদ্যুৎ প্রবাহের উপর রম নির্ভর করে না। ফলে ব্যবহারকারীও বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়া এ মোমোরির তথ্য মুছে ফেলতে পারে না। শুধুমাত্র পাঠ করা যায় বলে একে ROM বা Read Only Memory বলে। যেহেতু বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়া এর তথ্য সংযোজন বা বিয়োজন করা যায় না তাই একে স্থায়ী মেমোরি বলা হয়।

প্রশ্ন ১০ : র‍্যাম (RAM) ও রম (ROM) এক নয় ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: র‍্যাম (RAM) কে Random Access Memory বলা হয়। এটি কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোনের মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত থাকে। তথ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় প্রসেসর সাময়িকভাবে তথ্য র‍্যামে জমা করে। আবার প্রয়োজনে র‍্যাম থেকে তথ্য নিয়ে প্রসেসর তথ্যা প্রক্রিয়াজাত করে । প্রসেসর র্যামের যেকোনো জায়গা থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে বলে একে Random Access Memory বলে। RAM এর Capacity যত বেশি হবে কম্পিউটার তত দ্রুতগতিতে কাজ করবে। তবে RAM এ তথ্য স্থায়ীভাবে থাকে না।
অপরপক্ষে ROM বা Read Only Memory এটিও মাদারবোর্ডের সাথে যুক্ত থাকে৷ কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রগুলো চালু করার জন্য কিছু নির্দেশনার দরকার হয়। এই নির্দেশনাসমূহ রম (ROM)-এ স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকে। বিদ্যুৎ থাকা না থাকা উপর এই মেমোরি নির্ভর করে না। এবং রম এর তথ্য সহজেই মুছে ফেলা যায় না। শুধু পাঠ করা যায়। তাই পরিশেষে বলা যায় যে, র‍্যাম ও রম এক নয়।

৩য় অধ্যায়: নিরাপদ ও নৈতিক ব্যবহার

প্রশ্ন ১ : ইন্টারনেটে অপরিচিত কাউকে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া যাবে না- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ইন্টারনেট একটি ভার্চুয়াল জগৎ। এখানে অনেক ধরনের মানুষের ভার্চুয়াল উপস্থিতি থাকে। এক এক ধরনের উদ্দেশ্য ভিন্ন রকম। কেউ অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ইন্টারনেটে প্রবেশ করে প্রতারিত করে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে যখন আমরা অন্যের সাথে যোগাযোগ করি তখন হঠাৎ করে অপরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ হয়ে যায়। অপরিচিত মানুষের সাথে সরল বিশ্বাসে যোগাযোগ করে আমরা যদি নিজের ব্যক্তিগত তথ্য যেমন-ঠিকানা, ফোন নম্বর, ছবি দেই। আর অপরিচিত মানুষটি যদি সেই তথ্য ব্যবহার করে অপপ্রচার করে সেক্ষেত্রে আমাদের ক্ষতি হবে। যা বাস্তব জীবনে অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াবে। এ কারণে অপরিচিত কাউকে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া যাবে না।

প্রশ্ন ২ : কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার নিয়মগুলো উল্লেখ করো।
উত্তর: কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারে তিনটি নিয়ম মেনে চলতে হয় ৷ নিয়মগুলো হচ্ছে:
১. ইন্টারনেট কখনো একা অন্যদের চোখের আড়ালে ব্যবহার না করা। এমন জায়গায় বসে ব্যবহার করা যেখানে সবাই কম্পিউটারের স্ক্রিন দেখতে পারে।
২. ভুলেও কোনো অপরিচিত মানুষকে নিজের নাম, পরিচয়, ছবি বা পাসওয়ার্ড না দেওয়া।
৩. ইন্টারনেট ব্যবহার করা আনন্দের জন্য, কারও ক্ষতি করার জন্য নয়। কারো সাথে কখনো অসংযত, রূঢ়, অশালীন হওয়া উচিত নয়।

প্রশ্ন ৩ : IAD কী? কম্পিউটার আসক্তির কুফল বর্ণনা করো।
উত্তর: IAD-এর পূর্ণরূপ হলো- Internet Addiction Disorder। যারা খুব বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের জন্য IAD নামটি ব্যবহার করা হয়। অনেক বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করলে সেটি আসক্তিতে পরিণত হয়। কম্পিউটারে আসক্ত হলে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বেড়ে ওঠার জন্য মাঠে ঘাটে ছোটাছুটি করতে হয়, খেলতে হয়। যে সময় খেলার মাঠে ছোটাছুটি করে খেলার কথা, সে সময় ঘরের কোণায় কম্পিউটারের সামনে মাথা গুঁজে বসে থাকা মোটেই ভালো নয়। কম্পিউটারে আসক্ত হলে, কম্পিউটারের বাইরে চিন্তা করা যায় না। প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হয়। কাজকর্ম, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, লেখাপড়া কোনোটাই ঠিক মত করা যায় না। ফলে তাদের পৃথিবী, মানসিকতা এবং চিন্তাজগৎ সংকীর্ণ হয়ে আসে। 

প্রশ্ন ৪ : কম্পিউটার আসক্তির কুফল থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় বর্ণনা করো।

উত্তর: প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত সময় কম্পিউটার ব্যবহার করাকে কম্পিউটার আসক্তি বলা হয়। আজকাল শিশু ছেলে মেয়েরাসহ বয়স্ক ব্যক্তিরা কম্পিউটার আসক্তিতে আক্রান্ত হচ্ছে। একজন যখন তার মা বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজনকে সময় না দিয়ে সেই সময়টাও কম্পিউটারের পেছনে ব্যয় করে তখন বুঝতে হবে তার কম্পিউটারে আসক্তি জন্মেছে। কম্পিউটার আসক্তি মারাত্মক ক্ষতিকর বিশেষ করে কাজ কর্মে ক্ষতি, লেখাপড়ায় সমস্যা, মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ ইত্যাদি। এ আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাকে আনন্দ পাওয়া শিখিয়ে দিতে হবে— সবচেয়ে সুন্দর বিষয় হচ্ছে খেলাধুলা। কতক্ষণ সে কম্পিউটার ব্যবহার করবে নির্ধারণ করে দেওয়া। মাঝেমাঝে সুন্দর জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়া। মজার মজার গল্পের বই কিনে দেওয়া এবং নিয়মিত তাকে যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করলে কম্পিউটার আসক্তি থেকে রক্ষা পাবে। মনে রাখতে হবে— কম্পিউটার খুব চমৎসার একটা যন্ত্র। আমরা সেটাকে ব্যবহার করব, কিন্তু সেটা যেন কখনো আমাদের ব্যবহার না করে।

প্রশ্ন ৫ : সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক সম্পর্কে ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে সামাজিক নেটওয়ার্ক বলতে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েসাইটকে বোঝায়। সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আজকাল একে অন্যের সাথে সম্পর্ক বা যোগাযোগ রাখা যায়। এরকম কিছু সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক হচ্ছে ফেসবুক, টুইটার, লিংকড-ইন, সুমাজি ইত্যাদি। মানুষের ভেতর তথ্য ছড়িয়ে দেবার জন্য এই নেটওয়ার্কগুলোর কোনো তুলনা নেই। সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে সংগঠিত করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা যায়। স্বৈরশাসক বা সামরিক শাসককে আন্দোলন করে সরিয়ে দিতে এ নেটওয়ার্ক অনন্য ভূমিকা রাখছে। সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলো আমাদের সামাজিক বন্ধনকে দৃঢ় করছে। ফলে আমরা একে অপরের সাথে একটি সামাজিক নেটওয়ার্ককে আবদ্ধ হচ্ছি।

প্রশ্ন ৬ : কপিরাইট আইন কী? ফেয়ার ইউজ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: পৃথিবীর দেশে দেশে সৃজনশীল সৃষ্টিকর্মের কপি বা পুনরুৎপাদন, অবৈধ ব্যবহার ইত্যাদি বন্ধের জন্য যে আইনের বিধান রাখা হয়েছে। তাকে কপিরাইট আইন বলে। মুদ্রণ যন্ত্র আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে কপি করা বা নকল করা সহজ হয়েছে বলে, লেখকদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য সর্বপ্রথম যুক্তরাজ্যে ১৬৬২ সালে কপিরাইট আইন চালু হয়। এ আইনে বিভিন্ন বুদ্ধিভিত্তিক সম্পদ বা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের আওতায় চলে আসে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ সকল সৃজনশীল বা বুদ্ধিভিত্তিক সম্পদ ব্যবহার করার স্বাধীনতা থাকে। বিশেষ করে একাডেমিক বা পড়ালেখার কাজে সৃজনশীল কাজ কপি করা যায়। অর্থাৎ পড়ালেখার কাজে কোনো বইয়ের ফটোকপি করলে তাতে কপিরাইট আইন ভঙ্গ হয় না। এরকম ব্যবহারকে ‘ফেয়ার ইউজ’ বলা হয়।

প্রশ্ন ৭ : ওপেন সোর্স সফটওয়্যার বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: মুক্ত দর্শনের আওতায় যে কম্পিউটার সফটওয়্যারগুলো প্রকাশিত হয় সেগুলোকে একত্রে মুক্ত সফটওয়্যার বা ওপেন সোর্স সফটওয়্যার বলা হয়। এ সফটওয়্যারগুলো সহজে একজন অন্যজনকে কপি করে দিতে পারে, ব্যবহারও করতে পারে। তবে যেহেতু সবাই বিনামূল্যে কপি এবং পরিবর্তন করতে পারে তাই সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীরা মিলে এই সফটওয়্যারগুলোকে খুবই শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলে। যা একটি মুক্ত দর্শণ বা ওপেন সোর্স ফিলসফি এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

প্রশ্ন ৮ : কপিলেফট সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: সৃজনশীল কাজের স্রষ্টা সবাইকে যদি তার কাজ কপি করার সানন্দ অনুমতি দেন তবে তাকে কপিলেফট বলে। কপিরাইটের একেবারে উল্টোটি হলো কপিলেফট। কপিরাইট আর কপিলেফটের মাঝখানে রয়েছে সৃজনী সাধারণ বা ক্রিয়েটিভ কমন্স। সৃজনী সাধারণ লাইসেন্সের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কর্মস্রষ্টার কিছু কিছু অধিকার সংরক্ষিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে কেউ ইচ্ছে করলে লেখকের বই তার লিখিত বা আইনি অনুমতি ছাড়াই প্রকাশ করতে পারবে। তবে লেখকের নামে প্রকাশ করতে হবে এবং সেটি দিয়ে কোনো মুনাফা লাভ করা যাবে না। বর্তমানে এ আইনের আওতায় কম্পিউটার সফটওয়্যারগুলো সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং সবাই মিলে এ সফটওয়্যারগুলো শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলে।

প্রশ্ন ৯ : হ্যাকিং সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর: কোনো সিস্টেম বা ওয়েবসাইটের নিজস্ব বা গোপন অংশটুকু দেখা এবং পরিবর্তন করাই হচ্ছে হ্যাকিং। বর্তমানে নিয়মিতভাবে কম্পিউটারের ওয়েবসাইট হ্যাকিং হচ্ছে। সাধারণত ওয়েবসাইটে আমাদের যতটুকু তথ্য দরকার ততটুকুই আমরা দেখতে পাই। ওয়েবসাইটের গোপন অংশটুকু আমাদের প্রয়োজন নেই। অনেকে এ সকল গোপন অংশটুকুতে হ্যাকিং-এর মাধ্যমে ঢুকে কোনো কিছু পরিবর্তন বা নষ্ট করে চলে আসে। ঘরে বসেই এ কাজগুলো করা হয় বলে হ্যাকার ধরার উপায় নেই। কেউ যদি শুধুমাত্র কৌতূহলী হয়ে অন্যের ওয়েবসাইটে ঢুকে কোনো ক্ষতি না করে বের হয়ে আসে তাকে White hat hacker বা সাদা টুপি হ্যাকার বলে। অন্যথায় তাকে Black hat hacker বা কালো টুপি হ্যাকার বলে। হ্যাকিং একইসাথে বেআইনি এবং অনৈতিক কাজ।

প্রশ্ন ১০ : প্লেজারিজম কী? প্লেজারিজম ধরার কৌশল সম্পর্কে বর্ণনা করো।

উত্তর: ইন্টারনেটে অসংখ্য তথ্য রয়েছে। সেখান থেকে হুবহু কোনো কিছু কপি করে নিজের নামে জমা দেওয়াকে প্লেজারিজম বলে। প্লেজারিজম খুব বড় ধরনের অনৈতিক কাজ। বুঝে হোক বা না বুঝে হোক অনেকেই প্লেজারিজম করছে এবং তাদের অনেকেই এ জন্য খুব বড় বিপদে পড়ে যায়। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে প্লেজারিজম যেমন বেড়েছে ঠিক সেরকম প্লেজারিজম ধরার কৌশলও অনেক বেড়েছে। সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডকুমেন্টের কোন অংশ ইন্টারনেটের কোনো জায়গা থেকে হুবহু কপি করে এনেছে সেটা সহজেই ধরা যায়। তাই বিভিন্ন গবেষণা, প্রজেক্ট পেপার ইত্যাদির ডকুমেন্ট তৈরিতে প্লেজারিজম থেকে দূরে থাকতে হবে।

৪র্থ অধ্যায়: ওয়ার্ড প্রসেসিং

প্রশ্ন ১ : ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে কীভাবে বাংলা লেখা প্রস্তুত করা যায়? বর্ণনা করো।
উত্তর: ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম চালু করে বাংলা টাইপ বা লেখার জন্য ওয়ার্ড প্রসেসরকে প্রস্তুত করতে হয়। বাংলা লেখার জন্য ওয়ার্ড প্রসেসরে বিজয় সফটওয়্যারে Alt, Ctrl ও B এক সাথে চাপতে হয় এবং অভ্র সফটওয়্যারে F12 কী চাপতে হয়। বিজয় সফটওয়্যারের জন্য SutonnyMJ এবং অভ্র-এর জন্য NikoshBAN ফন্ট নির্বাচন করতে হয়। এবার বাংলা টাইপ শুরু করতে হয় এবং বাংলা লেখা ওয়ার্ড প্রসেসরে দেখা যায়। এভাবে ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে বাংলা লেখা প্রস্তুত করা যায়।

প্রশ্ন ২ : বাংলা লেখার সফটওয়্যার সম্পর্কে বর্ণনা করো।
উত্তর: কম্পিউটারকে বাংলা লিখার জন্য মুনীর চৌধুরীর উদ্ভাবিত বাংলা কী বোর্ড থেকে বাংলা ফন্টসহ শহীদ লিপি সফটওয়্যারটি প্রবর্তিত হয়। এটিই কম্পিউটারে বাংলা লেখার প্রথম সফটওয়্যার। কিন্তু এ সফটওয়্যারটি তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে নব্বই দশকের শেষের দিক পর্যন্ত বিজয়, প্রশিকা শব্দ, প্রবর্তনা, লেখনী প্রভৃতি সফটওয়্যার বাজারে আসে। সফটওয়্যার উন্নয়নের কারণে এবং বিভিন্ন সফটওয়্যারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় বিজয় সফটওয়্যারটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে অভ্র সফটওয়্যারটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন ৩ : বাংলা কী বোর্ড-এর উৎপত্তি বর্ণনা করো।
উত্তর: কী বোর্ড হলো ওয়ার্ড প্রসেসের প্রধান ইনপুট ডিভাইস। ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে বাংলায় লেখালেখি করতে হলে বাংলা কী বোর্ড আবশ্যক। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী ১৯৬৫ সালে সর্বপ্রথম বাংলা টাইপ রাইটারের জন্য একটি বিজ্ঞানসম্মত কী বোর্ড লে-আউট তৈরি করেন। তাঁর এ বাংলা কী বোর্ড লে-আউট সম্পূর্ণ ইংরেজি কী বোর্ডের ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়। পরবর্তীতে এই কী বোর্ড লে-আউটই কম্পিউটারের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে কম্পিউটারে বাংলা ওয়ার্ড প্রসেসিং সহজ হয়। 

প্রশ্ন ৪ : অভ্র সফটওয়্যারের জনপ্রিয়তার কারণ উল্লেখ করো।

উত্তর: অভ্র বাংলা লেখার ইউনিকোড সফটওয়্যার। অভ্র সফটওয়্যারে উচ্চারণভিত্তিক বাংলা টাইপিং ব্যবস্থা আছে। যারা বাংলা টাইপিং জানে না তারাও ইংরেজি টাইপিংয়ের মাধ্যমে সহজেই বাংলা লিখতে পারে। অভ্র সফটওয়্যারের বিশেষ সুবিধা হলো এতে মাউস দিয়ে লেখার সুবিধা রয়েছে। এতে একটি বিশেষ অন-স্ক্রিন কী বোর্ডে মাউস দ্বারা ক্লিক করে লেখা যায়। এসব সুবিধাসমূহ অন্য বাংলা লেখার সফটওয়্যার যেমন- বিজয়, শহীদ, লিপি, প্রবর্তনা, লেখনী ইত্যাদিতে না থাকার কারণেই অভ্র সফটওয়্যারটি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে।

প্রশ্ন ৫ : ওয়ার্ড প্রসেসিং বলতে কী বোঝ?

উত্তর: লেখালেখি করতে হলেই শব্দ বা ওয়ার্ড লিখতে হয়, সুন্দর করে। লিখতে হলে শব্দগুলোকে সাজাতে ও গোছাতে হয়। আর এটা হচ্ছে এক =/ ধরনের প্রক্রিয়া বা প্রসেসিং। কাজেই কম্পিউটারের মাধ্যমে কোনোকিছু লিখে সুসজ্জিতভাবে সাজানোর প্রক্রিয়াকেই বলা হয় ওয়ার্ড প্রসেসিং বা শব্দ প্রক্রিয়াকরণ।

প্রশ্ন-৬. তুমি ডকুমেন্ট সম্পাদনায় কপি ও পেস্ট কিভাবে করবে? বর্ণনা করো।

উত্তর: ডকুমেন্টে অনেক সময় কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশ কপি বা অনুলিপি করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়ার প্রয়োজন পরে। এ জন্য প্রথমে ডকুমেন্টের কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশকে নির্বাচন করে কী বোর্ডের Ctrl এবং C কী একসাথে চাপতে হয়। এভাবে ডকুমেন্ট সম্পাদনায় কপি করা যায়। আর পেস্ট বলতে ডকুমেন্টের কোনো অংশকে কাট বা কপি করে ডকুমেন্টের অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করাকে বুঝায়। এ জন্য ডকুমেন্টের কোনো শব্দ, অক্ষর, বাক্য বা কোনো অংশকে কাট বা কপি করে ডকুমেন্টের অন্য কোথাও নির্ধারিত স্থানে কারসর এনে কী বোর্ডে Ctrl এবং V কী একসাথে চেপে পেস্ট সম্পন্ন করা যায়। এভাবেই ডকুমেন্ট সম্পাদনায় কপি ও পেস্ট করা যায়।

প্রশ্ন ৭ : ডকুমেন্টে অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড, ইটালিক এবং আন্ডারলাইন করা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: ডকুমেন্টের যে অংশের অক্ষর বা লেখার আকার পরিবর্তন করতে হয় প্রথমে সেই অংশটি নির্বাচন করতে হবে। তারপর যে কোন ওয়ার্ড প্রসেসরে টুলবার বা রিবনে ফন্টের নামের পাশে যে B, I, U থাকে তাতে মাউস দ্বারা ক্লিক করতে হবে। তাহলে অক্ষর বা লেখার আকার যথাক্রমে বোল্ড, ইটালিক এবং আন্ডারলাইন হবে। কী বোর্ড এর সাহায্যেও এ কাজটি করা যায়। ডকুমেন্টে অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড করতে হলে কী বোর্ডে Ctrl এবং B কী দুইটি একসাথে চাপতে হবে। লেখা বা অক্ষর ইটালিক করতে Ctrl এবং I কী একসাথে চাপতে হবে এবং আন্ডারলাইন করতে Ctrl এবং U কী দুইটি একসাথে চাপতে হবে। এভাবে ডকুমেন্ট অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড, ইটালিক এবং আন্ডারলাইন করা যায়।

প্রশ্ন ৮ : ডকুমেন্ট এলাইনমেন্ট কী? এ কাজটি করা যায় কীভাবে?

উত্তর: কোনো ডকুমেন্টের অংশ বিশেষকে প্রয়োজন অনুসারে পৃষ্ঠার বামে, মাঝে এবং সবদিকে সমান (জাস্টিফাইড) প্যারাগ্রাফ আকারে এলাইন করাকে ডকুমেন্ট এলাইনমেন্ট বলা হয়। ডকুমেন্টের প্যারাগ্রাফ মার্জিনের কোন দিকে মিশে থাকবে তা এলাইনমেন্টের দ্বারা নির্ধারিত করা হয়। সাধারণত প্যারাগ্রাফের এলাইনমেন্ট বামদিকে থাকে। প্যারাগ্রাফের এলাইনমেন্ট চার ধরনের হয়ে থাকে। বামদিকে থেকে, ডানদিক থেকে, মাঝ বরাবর এবং সবদিকে সমান প্যারাগ্রাফ এলাইন। কোনো ডকুমেন্টের প্যারাগ্রাফের এলাইনমেন্ট পরিবর্তন করতে হলে প্রথমে তা নির্বাচন করতে হয়। তারপর ওয়ার্ড প্রসেসরে টুলবার বা রিবন থেকে এই আইকনগুলোতে মাউস দ্বারা ক্লিকের মাধ্যমে এলাইনমেন্ট কাজটি করা যায়। মাউস ছাড়াও কী-বোর্ড শর্টকার্ট হচ্ছে বাম দিকে CTRL I, ডানদিকে CTRLr, মাঝখানে CTRL e এবং জাস্টিফাইড CTRL j, কমান্ড ব্যবহার করে এলাইনমেন্ট করা যায়।

প্রশ্ন ১০ : ডকুমেন্ট ফরম্যাট-এর কাজগুলো লেখ।

উত্তর: ডকুমেন্ট ফরম্যাট-এর কাজগুলো হলো
১. অক্ষর বা লেখার আকার ছোট বা বড় করা।
২. অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড, ইটালিক, আন্ডারলাইন করা।
৩. প্যারাগ্রাফ এলাইনমেন্ট।
৪. লাইনের ব্যবধান নির্ধারণ।
৫. টেবিল করা।
৬. বুলেট ও নাম্বার দেওয়া।
৭. লেখার রং পরিবর্তন করা।
৮. স্থির চিত্র এবং ভিডিও সংযোজন করা।
৯. গ্রাফ করা।
১০. লে-আউট কালার ও জলছাপ দেওয়া। 

প্রশ্ন ১১ : কীভাবে তুমি ডকুমেন্ট প্রিন্ট বা মুদ্রণ করবে বল।

উত্তর: ফরম্যাটকৃত ডকুমেন্ট কাগজে ছাপানোকে প্রিন্ট বা মুদ্রণ বলে । ডকুমেন্ট প্রিন্ট করতে হলে প্রথমে আমাকে কম্পিউটারের সাথে কালিভর্তি প্রিন্টার যথাযথভাবে সংযুক্ত করতে হবে। প্রিন্টার চালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার এবং উপযুক্ত সাইজের কাগজ আছে কিনা দেখে নিতে হবে। এবার আমি যে কোনো ডকুমেন্ট খুলে বা ওপেন করে মাউস দিয়ে প্রিন্ট আইকনে ক্লিক করব। অথবা, শর্টকাট কী হিসেবে কী বোর্ডের Ctrl ও P কী দুইটি একসাথে চাপব। তখন একটি ডায়ালগ বক্স কম্পিউটারের মনিটরে দেখা যায়। আমি সে ডায়ালগ বক্সের ওপর এন্টার কী চাপলেই ডকুমেন্টটি প্রিন্ট মুদ্রণ শুরু হয়ে যাবে। এভাবে আমি প্রিন্টারের সাহায্যে ডকুমেন্ট প্রিন্ট বা মুদ্রণ করতে পারি।

৫ম অধ্যায়: শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার

প্রশ্ন ১ : শিক্ষকবিহীন পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতির মূল্যায়ণ করার মাধ্যমে বর্ণনা করো।
উত্তর: শিক্ষকবিহীন পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি মূল্যায়ণ করার মাধ্যম হলো ইন্টারনেট। ইন্টানেটের মাধ্যমে যে কোনো শিক্ষার্থী অনলাইন পরীক্ষা দিয়ে তার নিজের প্রস্তুতি মূল্যায়ণ করতে পারে। কেননা, পরীক্ষার সময় লেখাপড়ার অনেক চাপ থাকে। সেক্ষেত্রে শ্রেণি শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা সময় সাপেক্ষ ও অনেক সময় শিক্ষকের দেখা পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে পরীক্ষা দিতে পারে। এজন্য শিক্ষার্থীকে অনলাইন পরীক্ষা দেওয়ার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করবে। এতে করে তার সময় ও শ্রম লাঘব হবে সেই সাথে তার ভুল-ভ্রান্তিগুলো সংশোধনের সুযোগ পাবে। এভাবেই ইন্টারনেট মাধ্যম ব্যবহার করে একজন শিক্ষার্থী সহজেই তার পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি মূল্যায়ণ করতে পারে।

প্রশ্ন ২ : ইন্টারনেট থেকে তুমি কীভাবে বিজ্ঞান বই ডাউনলোড করবে? বুঝিয়ে বলো।
উত্তর: কোনো কিছু খুঁজে বের করার জন্য ইন্টারনেট মাধ্যম ব্যবহার করি। বর্তমানে ইন্টারনেট হচ্ছে শিক্ষা এবং জ্ঞান অর্জনের শ্রেষ্ঠতম মাধ্যম। আমার শ্রেণির সকল পাঠ্যপুস্তক NCTB-এর ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। সেজন্য আমাকে যে কোন ইন্টারনেট যুক্ত কম্পিউটারে ওয়েব ব্রাউজার খুলতে হবে। ঐ ওয়েবব্রাউজারে গিয়ে আমাকে NCTB নির্ধারিত ওয়েবসাইট ঠিকানা লিখতে হবে এবং ঐ সাইটে ঢুকতে হবে। ঐ সাইটে সকল শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক জমা করা আছে। সেখান থেকে নির্দিষ্ট বিজ্ঞান বই সিলেক্ট করে ডাউনলোড করতে হবে। ডাউনলোডকৃত বই সহজেই কম্পিউটারে পড়তে পারি এবং ইচ্ছা করলে প্রিন্টারে প্রিন্ট করে সম্পূর্ণ নতুন বই পেতে পারি। এভাবে আমি ইন্টারনেট থেকে বই ডাউনলোড করে উপকৃত হতে পারি।

প্রশ্ন ৩ : ভর্তি পরীক্ষায় ইন্টারনেটের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর: বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসেই ভর্তি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা যায়। রেজিস্ট্রেশন করার পর ইন্টারনেট থেকেই প্রবেশপত্র প্রিন্ট সংগ্রহ করা যায়। ফলে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পরীক্ষার দিন প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষা দিলেই হয়। বার বার ভর্তিচ্ছুক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। পরীক্ষার ফলাফলও ইন্টারনেটে সহজে পাওয়া যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার আগে সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানা যায়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের প্রতিষ্ঠানে সহজেই ভর্তি হওয়া যায়। এ জন্য ভর্তি পরীক্ষায় ইন্টারনেটের ভূমিকা অপরিসীম। 

প্রশ্ন ৪ : ভার্চুয়াল ক্লাসরুম কী? শিক্ষাক্ষেত্রে এর গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: একটি অনলাইন লার্নিং এনভায়রনমেন্ট যেখানে অডিও ভিজুয়াল সিস্টেমের মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর নির্ভর বিশেষ ক্লাস ব্যবস্থা। একেই ভার্চুয়াল ক্লাসরুম বলা হয়। ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত না থেকেও লেকচার শুনতে পারে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত থাকে। সম্প্রতি শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নত করার লক্ষ্যে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম ভর্চুয়াল ক্লাসরুম তৈরি করেন। যখন কোনো শিক্ষক নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াবেন তখন দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একসাথে শুনতে পারে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের সুবিধার ফলে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক দূর থেকে জটিল অপারেশন নিজের চোখে দেখতে পারে। আধুনিক কোনো ল্যাবরেটরির এক্সপেরিমেন্ট ঘরে বসে করতে পারে। এভাবে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম আমাদের উচ্চশিক্ষা এবং সঠিক শিক্ষায় সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখছে।

প্রশ্ন ৫ : শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ভূমিকা বর্ণনা করো।

উত্তর: শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেট বহুল ব্যবহার করা হয়। ছাত্রছাত্রীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে কোন বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য পেয়ে থাকে। নিজের অর্জিত জ্ঞানকে অনলাইন পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা যায়। ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন প্রফেসর ও শিক্ষকের লেকচার নোট নিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায়। ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো বিষয়ে অনলাইন কোর্স সম্পন্ন করা যায়। পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য বই ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সহজেই পড়া যায়। বর্তমানে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। এছাড়াও ইন্টারনেটে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য খুঁজে পেতে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে যেমন- শিক্ষক ৫ম কম থেকে একজন শিক্ষার্থী গণিত, পরিবেশ বিজ্ঞান, কম্পিউটার কৌশল ইত্যাদির বিভিন্ন কোর্স করতে পারে। এভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেট অনন্য ভূমিকা রাখছে।

প্রশ্ন ৬ : ই-বুক বলতে কী বোঝ? বাংলাদেশের একটি ই-বুক সাইটের নাম লেখো।

উত্তর: ই-বুক হলো মুদ্রিত বইয়ের ইলেকট্রনিক রূপ। ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয় বলে শব্দ, অডিও ও অ্যানিমেশন যুক্ত করা যায়। এ ধরনের বই কেবল কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা বিশেষ ধরনের রিডারে ই বুক পড়া যায়। একটি ই-বুকে কয়েক হাজার বই ধারণ করে রাখা যায়। শিক্ষার্থী যখন খুশি যেখানে এটি পড়তে পারে
বাংলাদেশে এই রকম একটি ই-বুক সাইটের নাম হলো : http://www.ebook.gov-bd। এটি বাংলাদেশের ই-বুকের সমাহার। এখানে বিভিন্ন শ্রেণির সকল পাঠ্যপুস্তকের ই-বুক সংস্করণ।

প্রশ্ন ৭ : শিক্ষা সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাইটের নাম লেখো।

উত্তর: শিক্ষা সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাইটের নাম নিম্নে লেখা হলো—
১. বাংলাদেশের ই-বুক সমাহার : http://www.ebook.gov.bd
২. বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সাইট : http://www.moedu.gov.bd
৩. উইকিপিডিয়া সাইট: http://www.en.wikipedia.org
৪. খান একাডেমির শিক্ষা : http://www.khanacademy.org
৫. গণিত বিষয়ক সাইট : http://www.mathforum.org/dr.math/Drmath

প্রশ্ন ৮ : সার্চ ইঞ্জিন কী? শিক্ষায় সার্চ ইঞ্জিনের ভূমিকা লেখো।

উত্তর: যখন কোনো তথ্য খোঁজার দরকার হয় তখন আমাদের বিশেষ এক ধরনের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারের ব্যবহার করতে হয়। একেই সার্চ ইঞ্জিন বলা হয়। বিভিন্ন ধরনের সার্চ ইঞ্জিন যেমন- Google, Yahoo, Bing ইত্যাদি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় তথ্য বা ওয়েবসাইটের ঠিকানা খুব সহজেই বের করা যায়। শিক্ষা ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করে। সহজেই উপকৃত হওয়া যায়। একজন শিক্ষার্থী তার গণিত বা পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করলে সহজেই তার সমাধান পেয়ে যায়। নিউটনের গতির সূত্র সংক্রান্ত তথ্য প্রায় ২০ লক্ষাধিক ওয়েবসাইটে রয়েছে। যেখান থেকে একজন শিক্ষার্থী সহজ ব্যাখ্যাটি বেছে নিতে পারে। তাছাড়াও পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে শিক্ষার মান ও গবেষণা সম্পর্কে জানা যায়। এভাবেই সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্যে পাওয়া শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য আমাদের শিক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।

প্রশ্ন-৯. উইকিপিডিয়া বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় মুক্ত বিশ্বকোষ হলো উইকিপিডিয়া একে তথ্যের বিশাল ভাণ্ডার বলা হয়। এটি সারা বিশ্বের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তৈরি করেছে এবং ক্রমাগত সমৃদ্ধ করে চলছে। প্রায় দুইশ’রও বেশি ভাষায় এটি চালু রয়েছে। প্রত্যেক উইকিপিডিয়াতে অনুসন্ধান করার একটি বাক্স থাকে। যেখানে কাঙ্খিত শব্দ বা শব্দাবলী লিখলে এই সংক্রান্ত নিবন্ধ বা নিবন্ধাবলী দেখতে পাওয়া যায়। ইংরেজি, বাংলা এবং অন্যান্য ভাষার ৪০ লক্ষেরও বেশি নিবন্ধন আছে, যার অনেকগুলি সরাসরি শিক্ষা সংক্রান্ত। বাংলা ভাষায় উইকিপিডিয়া এখনো ততটা সমৃদ্ধ নয়। বাংলা ভাষায় উইকিপিডিয়াতে ২৩ হাজারের বেশি নিবন্ধ আছে এবং সেখান থেকে কাঙ্খিত তথ্য পেয়ে উপকৃত হওয়া যায়।

প্রশ্ন-১০. খান একাডেমি কী? শিক্ষাক্ষেত্রে এর ভূমিকা বর্ণনা কর।

উত্তর: খান একাডেমি হচ্ছে বর্তমানে বিশ্বের জনপ্রিয় শিক্ষা সাইট, যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা ভিডিওর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষাবিদ সালমান খান ২০০৬ সালে এ সাইটটি প্রতিষ্ঠান করেন। এ সাইটে শিক্ষণীয় বিভিন্ন বিষয়ে সালমান খানের ৩৪০০টি ছোট ছোট ভিডিও আছে। এর মধ্যে গণিত, ইতিহাস, স্বাস্থ্যসেবা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি, মহাকাশ বিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান ইত্যাদি রয়েছে। বাংলা ভাষাতেও সালমান খানের ভিডিও পাওয়া যায়। বাংলা ভাষায় ভিডিও সংখ্যা ১২৫৮টি। এখান থেকে বীজগণিত, পাটিগণিত, পরিসংখ্যান, ত্রিকোণমিতি ইত্যাদির বাংলা ভাষায় ভিডিও দেখা এবং ডাউনলোড করা যায়। এভাবে খান একাডেমি শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

No comments:

Post a Comment