*প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে * বিসিএস পরীক্ষা এর প্রস্তুতি নিন আমাদের সাথে* আনলিমিটেড টেস্ট রয়েছে আপনার জন্য এই ব্লগে * নতুন ও আপডেট তথ্য পেতে পাশের "follow/অনুসরণ" বাটনে ক্লিক করুন * নিজেকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করুন * আপনার শিশুকে কাব কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করুন * আপনার বাড়ি, বিদ্যালয়, অফিসের আঙ্গিনায় সবজির বাগান করুন, নিরাপদ ও বিষ মুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন * করোনার কমিউনিটি স্প্রেইডিং রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন * অযথা পাড়া বেড়ানো, চায়ের দোকানে আড্ডা পরিহার করুন * পরিবারে অধিক সময় দেয়ার চেষ্টা করুন * ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন *

What is swimming and describe various types of swimming.

 সাঁতার কী এবং বিভিন্ন প্রকার সাঁতারের বর্ণনা দাও। 

 

সাঁতার কী?

সাঁতার এক ধরনের জলক্রীড়া প্রতিযোগিতাবিশেষ, যাতে প্রতিযোগীরা নির্দিষ্ট দূরত্বে দ্রুত অতিক্রমণের জন্য সচেষ্ট থাকেন ক্রিড়াআনন্দ লাভের জন্য পানির উপর ভেসে থাকা এবং সামনে অগ্রসর হওয়াকে সাঁতার বলে যিনি সাঁতার প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করেন তিনি সবার কাছে সাঁতারু নামে অভিহিত হন। বিভিন্ন দূরত্বে ও পর্যায়ের সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তন্মধ্যে ১৮৯৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক প্রতিযোগিতা সাঁতারের সর্বপ্রথম অন্তর্ভুক্তি ঘটে। বর্তমানে অলিম্পিক ক্রীড়ায় ১০০ মিটার থেকে শুরু করে ১৫০০ মিটার দূরত্বের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হ এবং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রি ক্রীড়া হিসেবে পরিচিত।

সাঁতার কয় ধরনেরকি কি বর্ণনা কর

প্রতিযোগিতামূলক সাঁতার চার প্রকার।

যথা-   (১) মুক্ত সাঁতার (Free style swimming);

  (২) চিৎ সাঁতার (Back Crawl stroke);

  (৩) বুক সাঁতার (Breast stroke);

  (৪) প্রজাপতি সাঁতার (Butter fly ‍stroke)

ফ্রি স্টাইল বা মুক্ত সাঁতারের নিয়মঃ 

এই সাঁতারে একজন প্রতিযোগী যে কোন স্টাইলে সাঁতার কাটতে পারে। তবে কীভাবে সাঁতার কাটলে দ্রুত যাওয়া যায় তা সাঁতারু বার বার অনুশীলন করে আয়ত্তে আনতে পারে। এজন্য দেহের অবস্থান, পা ও হাতের কাজ, শ্বাস-প্রশ্বাস- এইসব প্রক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ

১.দেহের অবস্থান : দেহটাকে উপুড় করে পানি সমান্তরালে রাখতে হবে। মাথা পানির সামান্য উপরে থাকবে। তবে পানির মধ্যে মাথার অবস্থান কখনও পানির উপর তুলে, আবার কখনও ঘাড় কাত করে মাঝে মাঝে পরিবর্তন করতে হয়

. পায়ের কাজ: পায়ের কাজ কোমর থেকে শুরু হয় এবং সামনে এগোনোর জন্য ডান ও বাম পা একের পর এক ওঠানামা করে । হাঁটুর কাছে পা সামান্য ভাঁজ করা অবস্থায় থাকে এবং পায়ের পাতা সোজা থাকে। বাম পায়ের গোড়ালি পানির উপর ওঠে না। পায়ের পাতা দিয়ে যখন পানিতে চাপ দেওয়া হয় তখন পায়ের পাতা ১২-১৮ ইঞ্চি পরিমাণ পানির নিচে যেতে পারে। পানির মধ্যে দু’হাত একবার ঘুরে আসার সময় দুই পা পানির মধ্যে ৬ বার ওঠা-নামা করবে। পায়ের কাজকে দু’ভাগে ভাগ করা যায- ক.উপরে কিক, খ.নিচে বিট

. হাতের কাজ : পানিতে দুই হাত একের পর এক মাথার সামনে ফেলতে হবে। এক হাত পানি কেটে শরীরের পাশ দিয়ে কোমরের কাছে যাবে, ঐ সময় কনুই সামান্য ভাঁজ হবে। হাতটি পানির উপর ওঠা মাত্র অপর হাত মাথার  সামনে পানিতে গিয়ে পড়বে। পানিতে হাত পড়ার সাথে হাত দিয়ে পানি কেটে শরীরকে সামনে নিতে হবে। হাত ও পায়ের সমন্ধিত কাজের ফলে সাঁতারুর গতি বৃদ্ধি পায়।

৪. শ্বাস প্রশ্বাস : সাঁতার কাটার সময় মাথাটাকে ঘুরিয়ে পানির উপর মুখ নিয়ে শ্বাস নেওয়া ও নিঃশ্বাস ছাড়া হয়। যে হাত পানির উপরে থাকবে সেদিকে মাথ ঘুরিয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া চালাতে হবে। তবে নিঃশ্বাস ছাড়তে হবে মুখ পানির মধ্যে ঘুরে যাওয়ার সময়। 

চি সাঁতারের নিয়মঃ 

চিৎ অবস্থায় শরীর পানির উপর থাকবে। পর্যায়ক্রমে ডান ও বাম হাত দিয়ে পানি সামনে থেকে পিছনে টেনে এবং পর্যায়ক্রমে ডান ও বাম পা দিয়ে পানি পিছনে ধাক্কা দিয়ে শরীর সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে এ সাঁতার দেওয়া হয়।

গোটা শরীর পানির উপরিভাগের সামান্য নিচে চিৎ অবস্থায় সমান্তরাল ভাবে রাখবে। বালিশে মাথা রাখার ন্যায় একটু উঁচু করে মাথা পানির উপর রাখতে হবে। কান পানির নিচেই থাকবে। চোখ উপর দিকে বা একটু পায়ের পাতার দিকে ফিরিয়ে রাখতে হবে। পায়ের আঙ্গুল শুধু পানির উপরিভাগ ভাঙ্গবে। কাঁধ পানির উপরিভাগ বরাবর থাকবে। কোমরের উপর অংশ নিচের অংশের চেয়ে একটু উঁচু করা থাকবে। 

বুক সাঁতারের নিয়মঃ 

উপুড় হয়ে বা বুক পানির উপর রেখে দু’হাত এক সাথে মাথা বরাবর পানির ভিতর দিয়ে সামনে নিয়ে দু’হাতের তালুতে পানি আটকিয়ে পিছন দিকে টেনে এবং দু’পা হাঁটু বরাবর ভাঁজ করে ব্যাঙের মত দু’পায়ের পাতা দিয়ে পিছনে লাথি মেরে শরীর সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার পদ্ধতিকে বুক সাঁতার বলা হয়

উপুড় অবস্থায় শরীর পানির উপরিভাগের সমান্তরাল করে রাখতে হবে। তবে পা মাথার চেয়ে সামান্য নিচু করে রাখবে। দৃষ্টি পানির উপর দিয়ে বা উপরিভাগের একটু নিচ দিয়ে সামনের দিকে রাখবে

হাত ও পা সঞ্চালন ক্রিয়া যে মুহূর্তে বন্ধ থাকবে সে মুহূর্তে হাত সামনে ও পা পিছনে সোজা বিস্তৃত অবস্থায় রাখবে। হাতের তালু পানির নিচের দিকে এবং পায়ের তলা উপর দিকে ফিরানো থাকবে

বাটারফ্লাই স্ট্রোক বা প্রজাপতি সাঁতারের নিয়মঃ 

চার প্রকার সাঁতারের মধ্যে বাটার ফ্লাই  স্ট্রোকের সাঁতার সবচেয়ে কঠিন । এতে সাঁতারুকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এর কলাকৌশল আয়ত্ত করতে সাঁতারুকে অনেক অনুশীলন করতে হয়।

১. দেহের অবস্থান :  অন্য সকল স্ট্রোকের মতো দেহ যথাসম্ভব পানির উপর সমান্তরাল অবস্থানে থাকবে। যেহেতু শরীরকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় এবং মাথা উঠিয়ে শ্বাস নিতে হয় তাই শরীরের পিছনের অংশটুকু একটু পানির নিচে থাকে

. পায়ের কাজ : দুই হাত জোড়া অবস্থান থাকবে। কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত যত বেশি নমনীয় হবে, তত জোরে পানিতে জোড় পায়ে আঘাত করা যাবে। পা দুটিকে একটু হাঁটু ভেঙ্গে নিচে ও পিছনে পানিতে ধাক্কা দিতে হবে। ডলফিন মাছ যেভাবে লেজের সাহায্যে পানিতে ধাক্কা দিয়ে চলে সেভাবে পায়ের এই ধাক্কাকে ডলফিন কিক বলে।

৩. হাতের কাজ : দুই হাত একসাথে মাথার সামনে নিক্ষেপ করতে হয়। দুই হাত এক সাথে মাথার সামনে চাপ দিয়ে শরীরকে সামনে এগিয়ে নিতে হয়। এর সাথে পায়ের ডলফিন কিকের সমন্বয় ঘটবে। পানির ভিতর থেকে দুই হাত উঠিয়ে যখন সামনে ফেলা হয় তখন খানিকটা প্রজাপতির পাখার মতো দেখতে মনে হবে। তাই একে বাটারফ্লাই স্ট্রোক নাম দেওয়া হয়েছে

. শ্বাস-প্রশ্বাস : একবার হাতের কাজ সম্পন্ন হলে দুইবার পায়ের ডলফিন কিক সম্পন্ন হয়। হাতের সঞ্চালনের কাজ এবং দ্বিতীয় বার পায়ের কিকের সময় মুখ দিয়ে শ্বাস গ্রহণেকাজ সম্পন্ন হয়। তখন মাথা থাকে পানির উপরে। 

সাঁতারের উপকারিতা কী?

সাঁতারের মাধ্যমে মানবদেহের সকল অঙ্গের ব্যায়াম হয়। তাই একে পূর্ণাঙ্গ ব্যায়াম বলা হয়েছে। জীবন রক্ষা, ক্রীড়া ও আনন্দের জন্য সকলের সাঁতার শেখা উচিত সাঁতারের উপকারিতা নিম্নরূপ :

§হৃদপিণ্ড, ফুসফুসের কার্যদক্ষতা বাড়ে
§রক্ত সঞ্চালনের গতি বাড়ে
§শরীরের নমনীয়তা বাড়ায়
§শরীরের ওজন কমে
§হার্টের অসুখ কমায়
§মানসিক চাপ কমে
§নিয়মিত সাঁতার কাটলে মন প্রফুল্ল এবং মস্তিষ্ক ভালে কাজ করে