যেভাবে সমাবেশে দাঁড়াতে হয়
আমরা প্রতিদিন স্কুলে সমাবেশে অংশগ্রহণ করি। এক শিফটের স্কুলে সকাল ৯:১৫ টায় সমাবেশ শুরু হয়। আর দুই শিফটের স্কুলে দুপুর বারোটায় সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অবস্থান : শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকার সামনে শ্রেণি ভিত্তিক লাইন ও ফাইলে ছোট থেকে বড় অনুসারে দাঁড়ায়। প্রধান শিক্ষক জাতীয় পতাকার ঠিক পেছনে দাঁড়ান এবং কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্কুল ভিজিটে এলে তিনি প্রধান শিক্ষকের ডানপাশে দাঁড়াবেন।
ক্রীড়া শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের পেছনে একটু বামে দাঁড়াবেন। তার বামে শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত একজন শপথ বাক্য পাঠক, তার বামে প্রার্থনার জন্য প্রত্যেক ধর্মের প্রতিনিধি হিসেবে একজন করে শিক্ষার্থী দাঁড়াবে। পর্যায়ক্রমে ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান ধর্মের বানী পাঠ করার জন্য স্ব স্ব ধর্মের একজন করে দাঁড়াবে। সর্ববামে দাড়াবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত একজন কমান্ডার। তবে কমান্ডারের ডানে জাতীয় সঙ্গীত পরিচালনার জন্য একজন শিক্ষার্থী নির্বাচন করে রাখা যায়।
অন্যান্য শিক্ষকগণ প্রধান শিক্ষকের পেছনে একটু ডানপাশে অর্থাৎ পরিদর্শনকারী কর্মকর্তার ঠিক পেছন থেকে ডানদিকে পর্যায়ক্রমে দাঁড়াবেন।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শন, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় ও শপথ বাক্য পাঠ করার সময় সকলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। অন্যান্য সময় আরামে দাঁড়াবে। শপথবাক্য পাঠ করার সময় সকল শিক্ষার্থী ডান হাত সামনের দিকে সোজা কাঁধ বরাবর উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াবে।
জাতীয় সঙ্গীত
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ,
চিরদিন তোমার আকাশ,
তোমার বাতাস আমার প্রাণে,
ওমা আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।
সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।।
ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে
মরি হায় হায়রে ওমা
ওমা অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে,
কী দেখেছি, আমি কী দেখেছি মধুর হাসি।।
সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
কী শোভা কী ছায়া গো
কী স্নেহ কী মায়া গো
কী আঁচল বিছায়েছো বটের মূলে নদীর কূলে কূলে
মা তোর মুখের বানী আমার কানে লাগে
সুধার মতো মরি হায় হায় রে
মা তোর বদনখানী মলিন হলে
আমি নয়ন, ও মা আমি নয়ন জলে ভাসি।
সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
এবার কমান্ড আসবে- “আরামে দাঁড়াও”। সকল শিক্ষার্থী আরামে দাঁড়াবে। আরামে দাঁড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীরা বাম পা উঠিয়ে ঈষৎ বামে ফাঁক করে দাঁড়াবে। হাত দু’টো পেছনে নিয়ে ডান হাত দিয়ে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ব্যতিত বাকি চার আঙ্গুল চেপে ধরে রাখবে।
কমান্ড আসবে- “কুরআন তেলাওয়াতের জন্য প্রস্তুত”। এবার সকল বালক ও পুরুষ শিক্ষক নামাজে দাঁড়িয়ে যেভাবে হাত বাঁধে সেভাবে হাত বাঁধবে। আর বালিকা ও মহিলা শিক্ষকগণ যেভাবে হাত বাঁধেন সেভাবেই হাত বাঁধবে। অর্থাৎ ছেলেরা নাভীর নিচে আর মেয়েরা বুকের উপর হাত বেঁধে দাঁড়াবে। মুসলিম ব্যতিত অন্য সকলে আরামে থাকবে।
সুরা ফাতিহা
বাংলা উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আলহ্বামদু লিল্লাহি রব্বিল আ’লামিন। আর রহমানির রহিম। মালিকি ইয়াও মিদ্দিন। ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তাঈন। ইহ দিনাস সিরাতল মুসতাক্বিম। সিরাতল লাজিনা আন আমতা আলাইহিম। গইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওলাদ দল্লিন। (আমিন)
বাংলা অর্থ: দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে। সকল প্রশংসা সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহরই। যিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। বিচার দিনের মালিক। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য চাই। আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর । তাদের পথে যাদের তুমি অনুগ্রহ করেছো। তাদের পথে না, যারা অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট। (আমিন)
আমিন বলার সাথে সাথে সকলে হাত নামিয়ে ফেলবে। কমান্ড আসবে- “যেমন ছিলে”। সকলে আরামে দাড়াবে। আবার কমান্ড- “গীতা পাঠের জন্য প্রস্তুত”। হিন্দুরা দুই হাত একত্র করে বুকের কাছাকাছি এনে করজোড়ে দাঁড়াবে। গীতা পাঠ চলবে। হিন্দু ব্যতিত অন্য সকলে আরামে থাকবে।
গীতা
যদা যদাহি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত। অভ্যূত্থানম ধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম। পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশয় চ
দুষ্কৃতাম। ধর্ম সংস্থাপনার্থায় সম্ভাবামি যুগে যুগে।' (শ্রীমদ্ভগবদগীতা,
জ্ঞানযোগ ৭/৮).
বাংলা অর্থ: হে ভরত, যখন পৃথিবীতে অধর্ম বেড়ে যায় তখনই আমি
অবতীর্ণ হই। অবতীর্ণ হয়ে সাধুদের রক্ষা, দুষ্টের বিনাশ ও ধর্ম সংস্থাপন
করি।
গীতাপাঠ শেষে সকলে আরামে থাকবে। এভাবে সকল ধর্মের বানী পাঠ শেষ হলে সোজা হওয়ার কমান্ড আসবে। সকলে সোজা হবে। আবার কমান্ড হবে- “শপথ পাঠের জন্য প্রস-তু-ত”। সকল শিক্ষার্থী ডান হাত কাঁধ বরাবর সোজা সামনের দিকে তুলে শপথ বাক্য পাঠ করবে।
শপথ বাক্য (নতুন )
আমি শপথ করছি যে,
মানুষের সেবায়
নিজেকে নিয়োজিত রাখবো।
দেশের প্রতি অনুগত থাকবো।
দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখার জন্য
সচেষ্ট থাকবো।
হে প্রভু,
আমাকে শাক্তি দিন,
আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করতে পারি,
বাংলাদেশকে শক্তিশালি রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।
(আ-মি-ন)।
শপথ বাক্য (পুরাতন)
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা। আমি দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। দেশকে ভালোবাসবো, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন।”
আমিন বলার সাথে সাথে সকলে হাত নামিয়ে ফেলবে। কমান্ড আসবে আরামে দাঁড়ানোর। সকলে আরামে দাঁড়ানোর পর কমান্ড আসবে- “প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য”। সকলে আরামে থেকে সর্তক হবে। প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিবেন এবং সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বক্তব্য শেষ করবেন।
এবার সমাবেশ থেকে ছুটির জন্য কমান্ড আসবে- ”ছুটির তালির জন্য প্রস্তুত। কাব তালি বাজাই জোরে- এক দুই তিনচারপাঁচ, এক দুই তিনচারপাঁচ, এক দুই তিনচারপাঁচ। সকলে কমান্ডের সাথে সাথে তালি দেবে এবং লাইন ধরে শ্রেণিকক্ষে চলে যাবে। শিক্ষকগণ নিজ নিজ কক্ষে প্রবেশ করবেন এবং ক্লাস নেয়ার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ক্লাসে চলে যাবেন।
(দুই শিফটের স্কুলে) পতাকা যেহেতু আগেই উত্তোলন করা থাকে সেহেতু সবার আগে প্রার্থনা, তারপর শপথ বাক্য পাঠ, তারপর জাতীয় সঙ্গীত ও শেষে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য। তবে এক অথবা দুই শিফটের স্কুলে সমাবেশের সময় নির্ধারিত কাজগুলো শেষ হলে সময় থাকলে দু’একটি পিটি করানো যায়। শীতের দিনে সমাবেশের নির্ধারিত কার্যক্রমের আগে ও পরে ওয়ার্মআপ এ্যাকটিভিটি অর্থাৎ তালে তালে ব্যায়াম করানো যায়।
মোহাম্মদ আবুল বাশার খান
“লেখাটা ভালো লাগলে প্লিজ আমার ব্লগটি Follow করুন। যদি আপনি আপনার ডিভাইসটি দিয়ে গুগল মেইলে সাইন ইন করে থাকেন তবে Simply এই পেইজের Follow বাটনে প্রেস করলেই হবে। আর সাইন ইন করা না থাকলে Follow বাটনে প্রেস করার পর আরেকটি পেইজ আসবে যেখানে আপনার gmail ID দিয়ে সাইন ইন করলেই Follow হয়ে যাবে।”
“লেখাটা ভালো লাগলে প্লিজ আমার ব্লগটি Follow করুন। যদি আপনি আপনার ডিভাইসটি দিয়ে গুগল মেইলে সাইন ইন করে থাকেন তবে Simply এই পেইজের Follow বাটনে প্রেস করলেই হবে। আর সাইন ইন করা না থাকলে Follow বাটনে প্রেস করার পর আরেকটি পেইজ আসবে যেখানে আপনার gmail ID দিয়ে সাইন ইন করলেই Follow হয়ে যাবে।”
নামাজে নাভির উপরে নয়, নিচে হাত বাধাকেই উত্তম বলা হয়েছে৷
ReplyDeleteYou are wrong dear!
Delete"নাভির উপর” বলতে নাভিতে বুঝানো হয়েছিল। সে যাহোক, মিসবাহ আপনাকে ধন্যবাদ। পাবলিক পোস্টে নির্ভুলতাই কাম্য। তাই শব্দটি সংশোধন করে নিচে লেখা হল।
ReplyDeleteদারুন একটি পোস্ট, ধন্যবাদ।
ReplyDeleteধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি সুন্দর বিষয় শেয়ার করার জন্য।
ReplyDeleteসুন্দর একটা পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
ReplyDeleteসুন্দর হয়েছে স্যার
ReplyDeleteধন্যবাদ স্যার.....
ReplyDeleteধন্যবাদ
ReplyDelete